অন্যান্য

পাকিস্তানে বন্যায় নিহতের সংখ্যা ১,৪০০ ছাড়িয়েছে

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ২৩:১৫, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২;  আপডেট: ০১:০৯, ২৯ অক্টোবর ২০২২

পাকিস্তানে বন্যায় নিহতের সংখ্যা ১,৪০০ ছাড়িয়েছে

দেশটির উত্তরাঞ্চলের পাহাড়ি এলাকার বরফখণ্ড গলে বৃষ্টির পানির সঙ্গে যোগ হয়ে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ছবি : সংগৃহীত।

পাকিস্তানে চলমান বন্যা পরিস্থিতিতে নিহতের সংখ্যা এখন পর্যন্ত ১,৪০০ ছাড়িয়েছে। এ ছাড়া বন্যায় ৩৩ মিলিয়নের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। গতকাল সোমবার সরকারিভাবে এ তথ্য জানিয়েছে দেশটি। বন্যার কারণে ঘর-বাড়ি, রাস্তাঘাট, রেলপথ, গৃহপালিত পশু ও জমির ফসল পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এর ফলে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি যা আগের অনুমানের চেয়ে ৩ গুণ বেশি। আগে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ১০ বিলিয়ন ডলার হতে পারে বলে ধারণা করা হয়েছিলো।

পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চলের পাহাড়ি এলাকার বরফখণ্ড গলে বৃষ্টির পানির সঙ্গে যোগ হয়ে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার পানি কমতে ৬ মাসের মতো সময় লাগতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ ছাড়া বিদ্যমান পরিস্থিতিতে কলেরা ও ডেঙ্গুর মতো পানিবাহিত বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিতে পারে বলেও সতর্ক করা হয়েছে।

পাকিস্তানের জলবায়ুমন্ত্রী শেরি রেহমান সোমবার বলেন, 'করাচিতে ডেঙ্গু মহামারি আকারে দেখা দিচ্ছে। এরই মধ্যে কয়েক লাখ রোগী সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে আসছেন। এ বছর এ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা গত বছরের তুলনায় ৫০ শতাংশ বেশি। বর্তমানে সারা দেশের বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে ৫,৮৪,২৪৬ জন মানুষ অবস্থান করছেন। এখনই তাদের স্বাস্থ্যপরীক্ষা করানো না গেলে তা দেশটিতে বড় বিপর্যয় ডেকে আনবে।'

এদিকে বন্যার কারণে দেশটিতে চাল ও ভুট্টার মতো প্রধান খাদ্যশস্যের প্রায় ৭০ শতাংশ নষ্ট হওয়ার কারণে খাদ্য ঘাটতি দেখা দিতে পারে বলেও সতর্ক করেন জলবায়ুমন্ত্রী। এ পরিস্থিতিতে বন্যা কবলিত এলাকার জন্যে জরুরি ভিত্তিতে খাদ্য, তাঁবু ও ওষুধের প্রয়োজন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

উল্লেখ্য, পাকিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতির জন্যে জলবায়ু পরিবর্তনকেই দায়ী করছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ এবং জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তনিও গুতেরেস। গত ৯ সেপ্টেম্বর শুক্রবার বন্যা কবলিত পাকিস্তানে দুই দিনের সফরে এসে দেশটির প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বর্তমান পরিস্থিতির জন্যে গভীর সমবেদনা জানান জাতিসংঘ মহাসচিব। এ সময় তিনি পাকিস্তানের জন্যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সাহায্যেরও আবেদন জানান।

বর্তমান সময়ে জলবায়ু পরিবর্তনের পেছনে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর ভূমিকা নগণ্য হলেও এর প্রভাব ও ভোগান্তি এ অঞ্চলের দেশগুলোরই সবচেয়ে বেশি বলে উল্লেখ করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব। শুক্রবার পাকিস্তানের বন্যা পরিস্থিতি সমন্বয় কেন্দ্রের (এনএফআরসিসি) সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক বৈঠক শেষে মহাসচিব বলেন, 'প্রকৃতপক্ষে বর্তমান জলবায়ু পরিবর্তনের ঘটনায় পাকিস্তান সরাসরি কোনো ভূমিকা রাখছে না। কারণ, দেশটির কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ তুলনামূলক খুবই কম। কিন্তু পাকিস্তানই জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতির অন্যতম শিকার।'

সূত্র : সিএনএন।