রাজনীতি

পদত্যাগপত্র জমা দিলেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী মারিও দ্রাঘি

রাজনীতি ডেস্ক

প্রকাশিত: ০১:২০, ১৫ জুলাই ২০২২;  আপডেট: ০১:১৫, ২৯ অক্টোবর ২০২২

পদত্যাগপত্র জমা দিলেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী মারিও দ্রাঘি

আস্থা ভোটে জিতলেও বড় শরিকের সমর্থন হারানোয় সরে দাঁড়াতে চান মারিও দ্রাঘি।

পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী মারিও দ্রাঘি। গতকাল বৃহস্পতিবার সংসদে আস্থা ভোটে জোট সরকারের সবচেয়ে বড় শরিক দল ফাইভ স্টার নিজেদের সমর্থন তুলে নেওয়ায় তিনি এ সিদ্ধান্ত নিলেন। তবে দেশটির প্রেসিডেন্ট সার্জিও মাতারেল্লা তার পদত্যাগ অনুমোদন করেননি।

মারিও দ্রাঘি ২০১১ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ইউরোপিয়ান সেন্ট্রাল ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। কোভিড মহামারির কারণে সৃষ্ট সঙ্কট থেকে ইতালির অবস্থার উত্তরণ ঘটানোর দায়িত্ব দিয়ে ২০২১ সালে দ্রাঘিকে দেশটির প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত করেন প্রেসিডেন্ট সার্জিও মাতারেল্লা। মনে করা হয়েছিলো, তিনি ইতালির সঙ্কট কাটাতে ইউরোপিয় ইউনিয়নের কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবিলায় গঠিত তহবিলের সদ্ব্যবহার করবেন। কিন্তু মহামারির ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে পরিবার ও ব্যবসাগুলোর সহায়তায় ২৩ বিলিয়ন ডলারের সহায়তা প্যাকেজ ঘোষণার প্রশ্নে জোট সরকারের সবচেয়ে বড় শরিক ফাইভ স্টারের নেতা জিসেপি কন্টে দ্রাঘির প্রস্তাবে সমর্থন দেননি। কন্টে বরং অভিযোগ তোলেন, নাগরিকদের জীবনযাপনের বাড়তি খরচের সঙ্কট মোকাবিলায় দ্রাঘি যথেষ্ট ভূমিকা নেননি।

শরিক দলের নেতা জিসেপি কন্টে অভিযোগ করেছেন, ইতালির ক্রমবর্ধমান সামাজিক সঙ্কট মোকাবিলায় সরকারের আর্থিক প্যাকেজ যথেষ্ট নয়।

সিনেটে ১৭২-৩৯ ভোটের ব্যবধানে সহজেই জয় পায় সরকারি জোট। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী মারিও দ্রাঘি বারবারই সতর্ক করে বলেছেন, ফাইভ স্টারের সমর্থন ছাড়া সরকার চলবে না। দ্রাঘি আগেও বলেছিলেন, দেশটির সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল ফাইভ স্টারকে ছাড়া গঠিত সরকারের নেতৃত্বে তিনি থাকবেন না। এদিকে ফাইভ স্টারও দীর্ঘদিন ধরেই সতর্ক করে আসছে, জীবনযাপনের খরচ সঠিকভাবে সামাল দেওয়ার জন্যে সরকারের প্রস্তাবিত আর্থিক সহায়তা প্যাকেজ পর্যাপ্ত নয়। এতে বদল না ঘটলে তারা সরকারের প্রতি সমর্থন তুলে নেবে।

পদত্যাগের সিদ্ধান্ত জানিয়ে পাঠানো এক বিবৃতিতে দ্রাঘি বলেন, 'সংসদে আজকের ভোট রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে খুব গুরুত্বপূর্ণ। যে বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য এই সরকারের শুরু থেকে সমর্থন জুগিয়ে এসেছে, এখন তা আর নেই।'

এ ঘটনায় দেশটির রাজনৈতিক দলগুলো এবং ইউরোপিয় ইউনিয়ন মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। বেশিরভাগই ফাইভ স্টারের নেতার ভূমিকাকে 'দায়িত্বজ্ঞানহীন' বলে উল্লেখ করেছেন।

দেশটিতে ২০২৩ সালে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। তবে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে মারিও দ্রাঘি সরে গেলে নির্বাচন এগিয়ে আনা হতে পারে।

উল্লেখ্য, ফাইভ স্টার বর্তমান জোট সরকারভুক্ত সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল। তবে বেশকিছুদিন ধরেই দলটির মধ্যে ভাঙন চলছে। দলটির সাবেক নেতা লুইজি ডি মেয়ো অভিযোগ করেছেন, দ্রাঘির নেতৃত্বাধীন সরকারের পতন ঘটিয়ে ফাইভ স্টার নিজেদের প্রতি সমর্থন চাঙ্গা করতে চাইছে। আর এমন কঠিন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে গিয়ে দলটি ইতালির আর্থ-সামাজিক অবস্থা ধ্বংস করতে চলেছে।

সূত্র : বিবিসি ও সিএনএন।