স্বদেশ

বাংলাদেশের উপকূলে প্রবেশ করেছে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং

সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

স্বদেশ ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৩:৩৭, ২৪ অক্টোবর ২০২২;  আপডেট: ০২:৪২, ২৯ অক্টোবর ২০২২

বাংলাদেশের উপকূলে প্রবেশ করেছে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের কারণে উপকূলীয় এলাকায় বিপদ সংকেত জারি করা হয়েছে।

প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রুপ নিয়ে আজ সোমবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে প্রবেশ করেছে সিত্রাংয়ের অগ্রভাগ। এর মূল অংশ আজ মধ্যরাত থেকে আগামীকাল ভোরের মধ্যে দেশের উপকূলে আঘাত হানবে বলে আবহাওয়া অধিদফতর থেকে জানানো হয়েছে। এ সময় ঘণ্টায় ৮০ থেকে ১০০ কিলোমিটার বেগে দমকা থেকে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাবে। এরইমধ্যে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলীয় এলাকায় জলোচ্ছ্বাস শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে।

ঘূর্ণিঝড় ও এর পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলায় সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তাঁর কার্যালয়ে আগামী ২৪ ঘণ্টার জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সমন্বয় ও ত্রাণ পর্যবেক্ষণ সেল চালু করা হয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম জানিয়েছেন।

উপকূলীয় অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রভাগ আঘাত হানার পর থেকেই সেখানে প্রবল ঝড়ো বাতাস ও বৃষ্টি শুরু হয়েছে। এ অবস্থায় ঘূর্ণিঝড়ের মূল অংশ আজ মধ্যরাতে বরিশাল ও চট্টগ্রামের উপকূল অতিক্রম করবে। এর প্রভাবে এরইমধ্যে উপকূলীয় জেলা নোয়াখালী, ভোলা, বরিশাল ও কক্সবাজারের বিভিন্ন এলাকায় ৯ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস দেখা দিয়েছে। মধ্যরাতে ঘূর্ণিঝড়ের মূল অংশ উপকূলে প্রবেশ করার পর এটি আরও বাড়বে বলে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান জানিয়েছেন। এর সঙ্গে ভারী বৃষ্টি হওয়ার কারণে উপকূলের সবগুলো জেলায় স্বল্পস্থায়ী বন্যা হতে পারে বলেও জানা গিয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের অগ্রভাগ খুলনা, সাতক্ষরী, বাগেরহাট থেকে শুরু করে ফেনী ও নোয়াখালী পর্যন্ত এবং এর কেন্দ্র বা মধ্যভাগ মূলত চট্টগ্রাম ও বরিশালসহ পটুয়াখালী, বরগুনা, পিরোজপুর, ভোলা জেলায় আঘাত করবে বলে জানা গেছে। এ অবস্থায় ঘূর্ণিঝড়টির কারণে দেশের ১৩টি জেলায় ক্ষয়ক্ষতি বেশি হবে বলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান আজ জানিয়েছেন। এসব জেলাগুলো হলো - সাতক্ষরী, খুলনা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, বরগুনা, ঝালকাঠি, ভোলা, পটুয়াখালী, লক্ষীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও বরিশাল।
 
তবে দুর্যোগ মোকাবেলায় আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখাসহ লোকজনকে সরিয়ে আনা হয়েছে বলেও এ সময় প্রতিমন্ত্রী জানান। একইসঙ্গে প্রায় ৭৩ হাজার স্বেচ্ছাসেবক দুর্যোগ মোকাবেলায় কাজ করছেন জানিয়ে প্রয়োজনীয় খাবার, নগদ টাকার বন্দোবস্ত রাখা হয়েছে বলেও তিনি জানান।

এদিকে ঝড়ের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে চট্টগ্রামে বিপদ সংকেত বাড়িয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। বর্তমানে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরসহ এর অদূরে থাকা দ্বীপ ও চরগুলোতে ৭ নম্বর, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরসহ এর অদূরের দ্বীপ ও চরগুলোতে ৬ নম্বর এবং মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এছাড়া উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, খুলনা, ভোলা, বরিশাল, লক্ষীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী এবং এসব জেলার অদূরে দ্বীপ ও চরগুলোতে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় ও এর পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে হটলাইন নম্বর চালু করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় সংক্রান্ত যেকোনো জরুরি প্রয়োজনে এসব নম্বরে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। নম্বরগুলো হলো -

হটলাইন - ০১৭৬৯০১১০৯৮৬, ০২-৫৫০২৯৫৫০ এবং ০২-৫৮১৫৩০২২।

ফ্যাক্স - ০২-৯১০২৪৬৯।

সূত্র : বাসস, প্রথম আলো, সময় টিভি, একাত্তর টিভি, চ্যানেল ২৪, ইনডিপিডেন্ট চ্যানেল।