রাজনীতি

ইসরায়েলে আল জাজিরা বন্ধ : অফিসে পুলিশি অভিযান

রাজনীতি ডেস্ক

প্রকাশিত: ২১:০০, ৬ মে ২০২৪;  আপডেট: ২১:০৩, ৬ মে ২০২৪

ইসরায়েলে আল জাজিরা বন্ধ : অফিসে পুলিশি অভিযান

অ্যাম্বাসেডর হোটেলে আল জাজিরার অফিস থেকে যন্ত্রপাতি সরিয়ে নিতে দেখা যায়।

ইসরায়েলে আল জাজিরা টেলিভিশন নেটওয়ার্কের কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে দেশটি। কাতারভিত্তিক এ টেলিভিশন চ্যানেলকে হামাসের 'মুখপত্র' বলে অভিযোগ করে এ সিদ্ধান্ত নেয় ইসরায়েল।

গতকাল রবিবার রাজধানী জেরুজালেমের অ্যাম্বাসেডর হোটেলে অবস্থিত আল জাজিরার অফিসে অভিযান চালায় ইসরায়েলি পুলিশ বাহিনী। এ সময় ওই অফিস থেকে টেলিভিশন সম্প্রচার কার্যক্রমের যন্ত্রপাতি সরিয়ে নেয় তারা।

প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, মন্ত্রিসভার সদস্যরা ইসরায়েলে আল জাজিরার কার্যক্রম বন্ধ করার ব্যাপারে সম্মতি দিয়েছেন।

এদিকে, পুলিশি অভিযানে আল জাজিরার যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইসরায়েলের যোগাযোগমন্ত্রী শ্লোমো কারহি।

তবে, ইসরায়েলের এমন অভিযোগ 'বিপজ্জনক ও হাস্যকর মিথ্যাচার' বলে মন্তব্য করেছে আল জাজিরা। এ ব্যাপারে সব ধরনের আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার অধিকার তাদের রয়েছে বলেও উল্লেখ করে সংবাদ মাধ্যমটি।

একইসঙ্গে, ইসরায়েল উদ্দেশ্যমূলকভাবে তাদের কর্মীদের টার্গেট করছে বলে অভিযোগ করেছে আল জাজিরা। এ সময় ইসরায়েলি আক্রমণে আল জাজিরার সাংবাদিকরা হতাহত হয়েছেন বলেও অভিযোগ করে তারা।

তবে, সাংবাদিকদের টার্গেট করার এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে ইসরায়েল।

এ নিষেধাজ্ঞা ও রবিবারের অভিযানের প্রতিক্রিয়ায় আল জাজিরা কর্তৃপক্ষ বলেছে, 'নিজেদের অপরাধ লুকাতে সাংবাদিকদের হত্যা ও ধরপাকড়ের মাধ্যমে মুক্ত স্বাধীনতার ওপর ইসরায়েল যেভাবে হস্তক্ষেপ করছে, তাতে আমরা দায়িত্ব পালন থেকে সরে যাইনি।'

এদিকে, বিবিসির একটি দল ঘটনাস্থলে গেলেও পুলিশ তাদের হোটেলটিতে ঢুকতে বা কোনো ভিডিওচিত্র ধারণ করতে দেয়নি বলে জানিয়েছে এই ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা।

সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ইসরায়েলে আল জাজিরার সম্প্রচার কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে আরেক বার্তা সংস্থা রয়টার্স। ইসরায়েলি স্যাটেলাইট টেলিভিশন সংস্থা 'ইয়েস' থেকে প্রচারিত এক বার্তার বরাত দিয়ে এ তথ্য জানানো হয়।

তবে, সম্প্রচার কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হলেও তা পুরোপুরি কার্যকর হয়নি। কারণ, দেশটিতে ফেসবুকের মাধ্যমে আল জাজিরার চ্যানেলে প্রবেশ করা যাচ্ছে।

এদিকে, এ ঘটনার সমালোচনা করেছে মানবাধিকার ও গণমাধ্যম সংগঠনগুলো। এ নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ চেয়ে দেশটির সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছে বলে দি অ্যাসোসিয়েশন ফর সিভিল রাইটস ইন ইসরায়েল (এসিআরআই) এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

এসিআরআই বলেছে, ‌‌'আল জাজিরাকে হামাসপন্থী হিসেবে দাবি করা 'ভিত্তিহীন'। এ ঘটনা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত। এভাবে আরব মিডিয়াকে টার্গেট করার মধ্য দিয়ে ইসরায়েল মূলত চলমান গাজা যুদ্ধের ব্যাপারে সমালোচনার পথ বন্ধ করতে চায়।'

দ্য ফরেন প্রেস অ্যাসোসিয়েশন (এফপিএ) বলেছে, 'ইসরায়েল সরকারের উচিত তাদের এ সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা। দেশটিতে আল জাজিরার কার্যক্রম বন্ধ করার ঘটনা মুক্ত গণমাধ্যমে বিশ্বাসী সবার মনে আশঙ্কা জাগাবে।'

এদিকে, এ নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়ে বিশেষ করে চলমান এ যুদ্ধাবস্থায় ইসরায়েলে সব গণমাধ্যমকে স্বাধীনভাবে কাজ করার পরিবেশ বজায় রাখার পরামর্শ দিয়েছে দ্য কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে) এবং  জাতিসংঘ।

সূত্র : বিবিসি।