রাজনীতি

গাজায় ইসরায়েলি হামলা

নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের ঘোষণা দিলো ফিলিস্তিন

রাজনীতি ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৩:২৭, ২৮ মার্চ ২০২৪;  আপডেট: ২৩:৩৯, ২৮ মার্চ ২০২৪

নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের ঘোষণা দিলো ফিলিস্তিন

রাষ্ট্রপতির বিশেষ ক্ষমতাবলে মন্ত্রিসভা গঠনের ঘোষণা দেন প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস।

নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের ঘোষণা দিয়েছে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ। ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস আজ বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতির বিশেষ ক্ষমতাবলে মন্ত্রিসভা গঠনের এ ঘোষণা দেন। মন্ত্রিসভা পুনর্গঠনের আন্তর্জাতিক চাপের মুখে এ সিদ্ধান্ত নিলো কর্তৃপক্ষ।

ফাতাহ দলের প্রধান মাহমুদ আব্বাস দীর্ঘ দুই দশক ধরে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। নতুন এ মন্ত্রিসভায় তিনি তার দীর্ঘদিনের পরামর্শক মোহাম্মদ মুস্তফাকে প্রধানমন্ত্রী করবেন বলে চলতি মাসের প্রথমদিকে জানানো হয়।

এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শাত্তাইয়াহ তার পুরো মন্ত্রিসভা নিয়ে পদত্যাগ করেন। গাজায় ইসরায়েলের নৃশংস হামলা ও পশ্চিম তীরে সহিংসতা বেড়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে এ সিদ্ধান্ত নেয় তার সরকার।

এদিকে মোহাম্মদ মুস্তফা মূলত স্বতন্ত্র রাজনৈতিক প্রার্থী। যুক্তরাষ্ট্র থেকে পড়াশোনা করে আসা এ অর্থনীতিবিদ গাজায় ট্রেকনোক্রেটিক সরকার গঠনের আবেদন জানিয়েছেন। একইসঙ্গে যুদ্ধবিধ্বস্থ গাজা পুনর্গঠনে স্বাধীন জনকল্যাণ তহবিল গঠনেরও দাবি জানান তিনি।

একইসঙ্গে মন্ত্রিসভা গঠনের পর গাজায় যুদ্ধবিরতি নতুন সরকারের প্রধান লক্ষ্য হবে বলে এক বিবৃতিতে মুস্তফা জানিয়েছেন। এছাড়া ইসরায়েলকে  এ উপত্যকা থেকে সম্পূর্ণভাবে বিতাড়িত করা এবং গাজার প্রতিটি অংশে বিপুল পরিমাণ ত্রাণ সহায়তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এ সরকার কাজ করবে বলে জানান তিনি।

মুস্তফা আরও বলেন, ‘পুনরুদ্ধার ও পুনর্গঠনের জন্য আগ্রাসন, ভূমি দখল এবং পশ্চিম তীরে দখলকারীদের সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ড বন্ধ করা অত্যন্ত প্রয়োজন।’

তবে নতুন সরকার গঠন অবৈধ বলে মন্তব্য করেছে হামাস। বরং, আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ফিলিস্তিনের সব দলের একজোট হয়ে সরকার গঠন করা উচিত বলে মন্তব্য করে দলটি।

উল্লেখ্য, এর আগে হামাস ও ফাতাহ বেশ কয়েকবার জোট সরকার গঠনের উদ্যোগ নিলেও প্রতিবারই তা ব্যর্থ হয়। কারণ, ইসরায়েল অধিকৃত পশ্চিম তীরের কিছু অংশের ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ হিসেবে রয়েছে মাহমুদ আব্বাসের ফাতাহ দল।

কিন্তু বহু বছর ধরেই এ দলটির সঙ্গে গাজা উপত্যকার দায়িত্বে থাকা হামাসের অস্বস্তিকর সম্পর্ক বিরাজ করছে। এমনকি ফাতাহকে গাজা থেকে উচ্ছেদের আগে ২০০৭ সালে এ দুই পক্ষের মধ্যে সংক্ষিপ্ত একটি যুদ্ধও হয়।

অন্যদিকে, ১৮ বছর ধরে কোনো নির্বাচন অনুষ্ঠান না করায় পশ্চিম তীরেও চাপের মধ্যে আছে ফাতাহ। একইসঙ্গে নিরাপত্তা প্রশ্নে ইসরায়েলের সঙ্গে আপস করার মতো নীতি অনুসরণের কারণে এ এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যেও দলটি খুবই অজনপ্রিয়।

এছাড়া, অনেক ফিলিস্তিনিই ফাতাহকে ইসরায়েলি দখলদারদের সহযোগী বলে মনে করে। কারণ, স্বায়ত্বশাসিত এ প্রাদেশিক কর্তৃপক্ষ ইসরায়েলি দখলদারি কমাতে যেমন ব্যর্থ হয়েছে তেমনি পশ্চিম তীরে তাদের অবৈধভাবে স্থাপনা নির্মাণ, স্থানীয়দের ঘরবাড়ি ভেঙ্গে দেওয়া এবং নির্বিচারে তাদের ধরে নিয়ে যাওয়ার মতো অপরাধও বন্ধ করতে পারেনি।

এ অবস্থায় ফিলিস্তিনিদের একটি বড় অংশ সম্প্রতি ক্রমাগতভাবে ৮৮ বছর বয়সী আব্বাসের পদত্যাগ চাইছে বলে সাম্প্রতিক এক জরিপে উঠে এসেছে।  

সূত্র : আল-জাজিরা।