রাজনীতি

ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধ : ত্রাণ নিতে আসা ফিলিস্তিনিদের উপর গুলি

মোট নিহতের সংখ্যা ৩০ হাজার ছাড়ালো

রাজনীতি ডেস্ক

প্রকাশিত: ২২:০৪, ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪;  আপডেট: ২২:০৭, ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধ : ত্রাণ নিতে আসা ফিলিস্তিনিদের উপর গুলি

আহতদের ত্রাণ ও গাধায় টানা গাড়িতে করে হাসপাতালে নেওয়া হয় বলে সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়।

গাজায় ত্রাণের জন্য অপেক্ষায় থাকা ফিলিস্তিনিদের উপর গুলি চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে একশরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে গাজার উত্তরাঞ্চলে হত্যাকান্ডের এ ঘটনা ঘটে। হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং হাসপাতাল সূত্রের বরাত দিয়ে ফিলিস্তিনি গণমাধ্যম এসব তথ্য জানায়।

এদিকে ইসরায়েলের সঙ্গে হামাসের চলমান যুদ্ধে নিহতের সংখ্যা এ পর্যন্ত ৩০ হাজার ছাড়িয়েছে বলে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। নিহতদের মধ্যে ২১ হাজার নারী ও শিশু বলেও জানা গেছে। আর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে এ তথ্য জানানোর মাত্র এক ঘণ্টার মধ্যেই গুলির এ ঘটনা ঘটলো।

আজ সকালে নাবলুসের রশিদ সড়কে ত্রাণের জন্য অপেক্ষায় থাকা গাজাবাসীর উপর ইসরায়েলি সেনারা নির্বিচারে গুলি চালায়। এতে ঘটনাস্থলেই ১০৪ জন নিহত ও ৭৬০ জন আহত হয় বলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল-কাদের জানান। এ সময় ইসরায়েলি বাহিনীর এ  কর্মকাণ্ডকে ‘নৃশংস হত্যাযজ্ঞ’ বলে অভিহিত করেন তিনি।

এদিকে আহতদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় ঘটনাস্থল থেকে তাদেরকে ত্রাণ ও গাধায় টানা গাড়িতে করে কাছের শিফা হাসপাতালে নেওয়া হয় বলে আল-কাদের জানান। এ সময় ঘটনাস্থলে থাকা জরুরি সেবাদানকারীদের পক্ষে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব হচ্ছিলো না এবং আর কোনোও যানবাহন পাওয়া যাচ্ছিলো না বলেও  জানান তিনি।

তবে তাদের উপর হামলা হতে যাচ্ছে, এ আশঙ্কা থেকে গুলি চালানো হয়েছে বলে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী সূত্রে জানা গেছে। এছাড়া প্রচণ্ড ভীড়ের কারণে এবং ট্রাকের নিচে চাপা পড়েও অনেকে নিহত হয়েছে বলে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে জানানো হয়।

উল্লেখ্য, হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে অ্যাখ্যা দেয় ইসরায়েলসহ বেশ কিছু পশ্চিমা দেশ। গত বছরের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী এ হামাস ইসরায়েলে অতর্কিতে হামলা চালায়। এ সময় তারা ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যা করাসহ আরও প্রায় ২৫৩ জন ইসরায়েলিকে ধরে নিয়ে যায়।

এর পরদিনই গাজাকে হামাসমুক্ত করতে এবং বন্দীদের উদ্ধারে গাজা উপত্যকায় বড় পরিসরে সেনা ও বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী, যা এখনও চলমান রয়েছে। অন্যদিকে পাল্টা আক্রমণ করে চলেছে হামাসও।

দুই পক্ষের এ হামলা, পাল্টা হামলায় গাজা উপত্যকায় এ পর্যন্ত কমপক্ষে ৫ লাখ ৭৬ হাজার মানুষ বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। পর্যাপ্ত খাবারের অভাবে গাজা উপত্যকার মোট জনসংখ্যার এই এক-চতুর্থাংশ মানুষ দুর্ভিক্ষের শিকার হওয়ার ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।

একইসঙ্গে গাজার উত্তরে প্রতি ছয়জন শিশুর মধ্যে একজন ভয়াবহ অপুষ্টির শিকার। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের পক্ষ থেকে এসব তথ্য জানানো হয়।

অন্যদিকে, গাজার উত্তরাঞ্চলের এক হাসপাতালে অপুষ্টি ও পানিশূন্যতায় ৬ শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে গত বুধবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়। এর মধ্যে ২টি শিশু শিফা ও বাকি ৪টি শিশু কামাল আদওয়ান হাসপাতালে মারা যায় বলে জানানো হয়।

সূত্র : বিবিসি।