কেনিয়ায় সরকারবিরোধী বিক্ষোভে নিহত ১৬ : অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল
রাজনীতি ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৩:৪৮, ২৬ জুন ২০২৫; আপডেট: ২৩:৫৭, ২৮ জুন ২০২৫

রাজধানী নাইরোবিসহ কেনিয়ার বিভিন্ন শহরে হাজার হাজার মানুষ সরকারবিরোধী বিক্ষোভে রাস্তায় নেমে আসে।
কেনিয়ায় চলমান সরকারবিরোধী বিক্ষোভে গতকাল বুধবার পর্যন্ত ১৬ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। এতে আরও প্রায় ৪০০ জনের মতো আহত হয়েছে বলে কেনিয়াভিত্তিক অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে। হিউম্যান রাইটস অর্গানাইজেশনের প্রধান ইরাংগু হিউটন আজ বৃহস্পতিবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বছরের জুনে কেনিয়ায় কর-বিরোধী বিক্ষোভ পরিচালিত হয়। চলতি সপ্তাহে কেনিয়ার জনগণ সেই বিক্ষোভের বর্ষপূর্তি পালনে রাস্তায় নেমে আসে। কিন্তু, এতেও প্রায় ডজনের মতো নাগরিক নিহত হয়। এর প্রতিবাদে সারা দেশজুড়ে বড় আকারের বিক্ষোভ শুরু হয়।
গতকাল বুধবার ওই বিক্ষোভের বর্ষপূর্তি পালনে রাজধানী নাইরোবিসহ অন্যান্য শহরে মানুষজন রাস্তায় নেমে আসে। নাইরোবিতে মিছিল নিয়ে জনগণ কেনিয়ার সংসদ ভবন ও প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ে সামনে গেলে সেখানে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে তাদের আটকে দেয়।
এ সময় আন্দোলনকারীদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে সরকারি নির্দেশে পুলিশ গুলি চালায় বলে বার্তা সংস্থা সিএনএন জানায়। একইসঙ্গে, কেনিয়ার যোগাযোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ থেকে সব ধরনের টেলিভিশন ও রেডিও স্টেশনকে তরুণদের এ মিছিলের সংবাদ সরাসরি সম্প্রচার না করারও নির্দেশ দেওয়া হয়।
এ ক্ষেত্রে এ সংক্রান্ত সংবাদ সরাসরি সম্প্রচার করা হলে তা কেনিয়ার বিদ্যমান আইন বিরোধী হবে বলে সরকার থেকে মিথ্যা দাবি করা হয়। ফলে, এ ধরনের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে সরকার থেকে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকী দেওয়া হয় গণমাধ্যমগুলোকে।
ফলে, অনেক গণমাধ্যই তখন বিক্ষোভের সরাসরি সম্প্রচার বন্ধ করে দেয়। কিন্তু, আদালত থেকে সরকারি এ নির্দেশনা খারিজ করে দেওয়ার পর বিভিন্ন গণমাধ্যম আবারও সম্প্রচার শুরু করে।
এদিকে, আন্দোলন চলাকালে বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে টিয়ার গ্যাস ও জলকামান থেকে পানি ছিটানো হয়। এ অবস্থায় বুধবারের এ বিক্ষোভে প্রায় ৪০০ জনের মতো আহত হয় বলে কেনিয়াভিত্তিক অ্যামিনেস্টি এক বিবৃতিতে জানায়। তাদের এ বিবৃতিতে স্বাক্ষর করে কেনিয়ার আইনজীবী সমিতি, পুলিশ সংস্কার কার্যক্রম দল এবং কেনিয়ার মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন।
একইসঙ্গে, আহতদের মধ্যে ৮৩ জন মারাত্মকভাবে জখম হয় এবং কমপক্ষে ৮ জন বিক্ষোভকারীকে গুলির আঘাতের চিকিৎসা দেওয়া হয় বলেও ওই বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালে মূলত বিতর্কিত একটি কর সংক্রান্ত বিল বাতিলের দাবিতে কেনিয়ার সাধারণ জনগণ বিক্ষোভ করে। কারণ, ওই বিল আইন আকারে পাস হলে দেশটিতে করের পরিমাণ অনেক বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হয়। কিন্তু, ওই আন্দোলনে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের উপর ব্যাপক নির্যাতন চালিয়েছে বলে কেনিয়ার তরুণ সমাজ এখনও অভিযোগ করে থাকে। কারণ, সে সময় পুলিশের নির্যাতনে একজন স্কুল শিক্ষকসহ পথের পাশের নিরীহ এক দোকানদার নিহত হয়।
এখানে কেনিয়ার সরকারবিরোধী আন্দোলনের আরও কিছু ছবি :
সূত্র : সিএনএন।