জলবায়ু

নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বাড়তে পারে বৈশ্বিক উষ্ণতা : জাতিসংঘ

জলবায়ু ডেস্ক

প্রকাশিত: ০০:২৩, ২৯ মে ২০২৫;  আপডেট: ০০:৩৩, ২৯ মে ২০২৫

নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বাড়তে পারে বৈশ্বিক উষ্ণতা : জাতিসংঘ

গত কয়েক বছর ধরেই উষ্ণতা বেড়ে যাওয়ার নানা প্রতিকূলতার মুখোমুখি হচ্ছে বিশ্ববাসী।

বৈশ্বিক গড় উষ্ণতা ২০২৫ সাল থেকে ২০২৯ সালের মধ্যে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসকে (২ দশমিক ৭ ডিগ্রি ফারেনহাইট) ছাড়িয়ে যাবে। এ সময়ের মধ্যে বৈশ্বিক উষ্ণতা ১ দশমিক ২ থেকে ১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বাড়তে পারে বলে জাতিসংঘ জানিয়েছে। এর মধ্য দিয়ে পৃথিবীব্যাপী বেড়ে চলা উষ্ণতার বর্তমান ধারা বজায় থাকবে বলে সতর্ক করে সংস্থাটি। 

এরইমধ্যে ২০২৩ ও ২০২৪ সাল ছিলো পৃথিবীর সবচেয়ে উষ্ণতম বছর। জাতিসংঘের জলবায়ু সংস্থা ওয়ার্ল্ড মেটেওরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশন (ডব্লিউএমও) থেকে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। 

তবে, গত ১০ বছর ধরেই পৃথিবী রেকর্ড পরিমাণ উষ্ণ হয়ে চলেছে বলে ডব্লিউএমওর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল কো ব্যারেট জানান। সামনের দিনগুলোতেও এ অবস্থার তেমন হেরফের হবে না বলে সতর্ক করেন তিনি। 

ব্যারেট বলেন, ‘এভাবে তাপমাত্রা বেড়ে চলার অর্থ হচ্ছে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে আমাদের অর্থনীতি, দৈনন্দিন জীবন, জীববৈচিত্র্য সর্বোপরি আমাদের গ্রহের উপর।’ 

২০১৫ সালে প্যারিস জলবায়ু সম্মেলনে বৈশ্বিক উষ্ণতার পরিমাণ ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমাবদ্ধ রাখার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়। একইসঙ্গে, উষ্ণতা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে ধরে রাখারও লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেন বিশ্ব নেতারা।

তবে, এ লক্ষ্যমাত্রা প্রাক-শিল্পায়ন যুগের তুলনায় বেশি। কারণ, শিল্পায়নের কারণে বিশ্বব্যাপী কয়লা, তেল ও গ্যাস পোড়ানোর মাত্রা অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যায়। যার ফলে বায়ুমন্ডলে ব্যাপক হারে কার্বন ডাইঅক্সাইড গ্যাস নিসৃত হতে থাকে। 

উষ্ণতা বেড়ে চলার প্রতিবাদে সোচ্চার পরিবেশবাদীরা। ছবি : ইন্টারনেট।

আর, এ গ্রিন হাউস গ্যাসই মূলত উষ্ণতা অব্যাহতভাবে বেড়ে চলার মূল কারণ। এ অবস্থায় বৈশ্বিক উষ্ণতা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ধরে রাখা অসম্ভব হবে বলে জলবায়ু সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেন। 

এ ক্ষেত্রে, ২০২৫ থেকে ২০২৯ সালের মধ্যে প্রতি বছর বৈশ্বিক গড় উষ্ণতা ১ দশমিক ২ থেকে বেড়ে ১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছাতে পারে বলে ডব্লিউএমও থেকে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। আর, এ মাত্রা অবশ্যই প্রাক-শিল্পায়ন যুগের তুলনায় অনেক বেশি। 

একইসঙ্গে, ২০২০ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে কমপক্ষে যেকোনো একটি বছর ২০২৪ সালের তুলনায় বেশি উষ্ণ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ অবস্থা তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা ৮০ শতাংশ বলে ডব্লিউএমও জানায়। একইসঙ্গে, এটি হবে এ সময়ের মধ্যে সর্বাধিক উষ্ণ বছর। 

অন্যদিকে, পরবর্তী পাঁচ বছরের মধ্যে অন্তত একটি বছরের বৈশ্বিক উষ্ণতা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যাবে বলে প্রতিষ্ঠানটি জানায়। এ অবস্থা সৃষ্টি হওয়ার সম্ভবনা খুব কম হলেও এমনটি হতে পারে বলে সতর্ক করা হয়। 

সূত্র : ডয়চে ভেলে।