রাজনীতি

যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার

১২৩ বন্দিকে মুক্তি দিলো বেলারুশ

রাজনীতি ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৩:৫৬, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫;  আপডেট: ০০:০৪, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫

১২৩ বন্দিকে মুক্তি দিলো বেলারুশ

কোলেজনিকোভাসহ আরও ১১৩ বন্দীকে বেলারুশ থেকে ইউক্রেনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ায় ১২৩ বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে বেলারুশ। মুক্তি পাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন খ্যাতিমান রাজনৈতিক কর্মী মারিয়া কোলেজনিকোভা এবং শান্তিতে নোবেল জয়ী আলেজ বিয়ালিয়াৎস্কি।

দেশটির রাজধানী মিনস্কে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত জন কোলের সঙ্গে আলোচনার পর বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হয়।

একাধিক বিষয়ে বেলারুশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলো যুক্তরাষ্ট্র। প্রাথমিকভাবে দেশটি থেকে পটাশ আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছে। সার উৎপাদনের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ উপাদান এ পটাশ বেলারুশের অন্যতম রপ্তানিযোগ্য পণ্য। 

জন কোল বলেন, 'দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক হতে শুরু করলে পর্যায়ক্রমে অন্যান্য নিষেধাজ্ঞাও তুলে নেওয়া হবে।'

যুক্তরাষ্ট্রের এ উদ্যোগ বেলারুশের নেতা আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কোর জন্য এক বিরাট সাফল্য। একইসঙ্গে, যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিকভাবে এ নেতাকে বিচ্ছিন্ন করার নীতি থেকেও সরে আসায় দেশটির এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন তিনি।

এদিকে, কোলেজনিকোভাসহ আরও ১১৩ বন্দীকে ইউক্রেনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। রাজধানী কিয়েভে অবস্থিত যুদ্ধবন্দীদের চিকিৎসা সংক্রান্ত  সমন্বিত সদরদফতর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।

এখানে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তাদের পোল্যান্ড ও লুথিয়ানিয়ায় পৌঁছে দেওয়া হবে বলে টেলিগ্রামে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে ইউক্রেন জানায়। 

পাঁচ বছর আগে এক অস্বচ্ছ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বেলারুশের ক্ষমতায় আসেন প্রেসিডেন্ট লুকাশেঙ্কো। সে সময় তার ক্ষমতা গ্রহণের প্রতিবাদে দেশটিতে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়। এ বিক্ষোভ দমাতে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের উপর নৃশংসভাবে জুলুম করে। 

একইসঙ্গে, রাজনৈতিক কর্মী মারিয়া কোলেজনিকোভাসহ আটক করা হয় শত শত বিক্ষোভকারীকে। তখন থেকে এখনও পর্যন্ত দেশটিতে রাজনৈতিক যেকোনো ভিন্নমতকে কঠোরভাবে দমন করা হচ্ছে।

এ অবস্থায় সে সময় লুকাশেঙ্কোকে স্বীকৃতি দেয়নি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপিয় ইউনিয়ন। একইসঙ্গে, আন্তর্জাতিকভাবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করা হয়। 

পরবর্তীতে, ২০২২ সালে রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা চালালে বেলারুশের উপর নিষেধাজ্ঞা আরও জোরদার করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। কারণ, সে সময় বেলারুশের ভূখণ্ড ব্যবহার করে রাশিয়ান সেনারা ইউক্রেনে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো শুরু করে। 

তবে, যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক এ পদক্ষেপের পর মার্কিন দূত জন কোল প্রেসিডেন্ট লুকাশেঙ্কোর সঙ্গে ইউক্রেন বিষয়ে আলোচনা করেছেন বলে জানিয়েছেন। 

এ ক্ষেত্রে চলমান ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ বিষয়ে পুতিনের সঙ্গে আলোচনা করতে বেলারুশের সাহায্য চাওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে, এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে যুক্তরাষ্ট্র বেলারুশকে সবধরনের সহযোগিতা করবে বলেও জন কোল জানান।

উল্লেখ্য, বেলারুশের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার বিষয়টি মার্কিন নীতির ক্ষেত্রে একটি বড় ধরনের পরিবর্তন। একইসঙ্গে, দেশটির উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ ও বিচ্ছিন্ন করে রাখার চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের বিপরীতে অবস্থান নেওয়া মূলত ইউরোপের অবস্থানেরও বিরুদ্ধাচারন। 

সূত্র : বিবিসি।