অন্যান্য

বন্ডি বীচে গুলির ঘটনা : আগ্নেয়াস্ত্র আইন আরও কঠোর করছে অস্ট্রেলিয়া

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ২৩:৫৭, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫;  আপডেট: ০৩:৪৫, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫

বন্ডি বীচে গুলির ঘটনা : আগ্নেয়াস্ত্র আইন আরও কঠোর করছে অস্ট্রেলিয়া

এটি অস্ট্রেলিয়ায় গত এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ হামলার ঘটনা।

দেশজুড়ে আগ্নেয়াস্ত্র আইন কঠোর করতে যাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া। দেশটির সর্বস্তরের নেতাদের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে ইতিবাচক সাড়াও পাওয়া গিয়েছে। আজ সোমবার এসব তথ্য জানিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রেসিডেন্ট অ্যান্থনি আলবানেজ।

নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী অস্ট্রেলিয়ায় কোনো ব্যক্তি আগ্নেয়াস্ত্র কেনার সময় তার অতীত সম্পর্কে আরও বিস্তারিতভাবে তথ্য সংগ্রহ করা, নাগরিকত্ব নেই, এমন ব্যক্তিদের আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স না দেওয়া এবং ব্যক্তির অস্ত্র কেনার পরিধি সীমিত করার মতো উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানানো হয়।

এমন সময় অস্ট্রেলিয়া সরকারের তরফ থেকে এ ঘোষণা এলো, যার মাত্র একদিন আগেই অর্থাৎ গতকাল রবিবার সিডনির বিখ্যাত বন্ডি সমুদ্র সৈকতে বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটে। হুইদীদের লক্ষ্য করে সংঘটিত এ হামলায় ১৫ জন নিহত হয়।

এর আগে, ইহুদীদের ধর্মীয় উৎসব হানেকা উপলক্ষ্যে এর প্রথম দিনটি উদযাপনে সৈকতে জড়ো হয় প্রায় হাজার মানুষ। এ সময় হঠাৎই তাদের লক্ষ্য করে গুলি করা শুরু করে দুই বন্দুকধারী।

তারা সম্পর্কে বাবা-ছেলে বলে জানা গেছে। এদের মধ্যে ঘটনাস্থলেই বাবা (৫০) নিহত হয় এবং তার ছেলে (২৪) বর্তমানে হাসপাতালে সংকটাপন্ন অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছে।  

এদিকে, বন্দুকধারীদের গুলিতে নিহত ১৫ জনের মধ্যে একজন হোলোকাস্ট থেকে বেঁচে যাওয়া ব্যক্তি, একজন পাদ্রী এবং ১০ বছরের এক মেয়েশিশু ছিলো বলে জানা গেছে।

এক প্রত্যক্ষদর্শীর করা ভিডিওতে গোলাগুলির সময় হামলাকারীর হাত থেকে বন্দুক ছিনিয়ে নিতে দেখা যায় আল আহমেদকে।

এ ঘটনাকে পুরোপুরিই ‌'নৃশংস, ইহুদিবিদ্বেষী এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড' বলে এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী আলবানেজ।

বর্তমানে ঘটনার মূল কারণ উদঘাটনে তদন্ত শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু, ঘটনাটি ঘিরে অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন জায়গায় মুসলিমবিদ্বেষ দেখা দিয়েছে। তবে, এখনই এ নিয়ে কোনো সিদ্ধান্তে না আসতে জনগণকে অনুরোধ জানায় পুলিশ প্রশাসন।

এদিকে, সেদিনের গুলির ঘটনার সময় আহমেদ আল আহমেদ নামের স্থানীয় এক দোকানির সাহসিকতা সবার নজরে এসেছে। 

কারণ, বন্দুক সম্পর্কে কোনো পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকা এ ব্যক্তিই (৪৩) ওইদিনের ঘটনার সময় বন্দুকধারীদের একজনকে প্রতিহত করে এবং তার কাছ থেকে বন্দুক ছিনিয়ে নিতে সক্ষম হয়।

এ ঘটনায় এক সংবাদ সম্মেলনে আহমেদকে ‌'প্রকৃত বীর' বলে তার প্রশংসা করেছেন অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের প্রধান ক্রিস মিনস। 

তিনি বলেন, ‌'আমি এই প্রথম এমন অবিশ্বাস্য ঘটনা দেখলাম - একজন বন্দুকধারী যখন নির্বিচারে মানুষের উপর গুলি চালাচ্ছিলো তখন এক ব্যক্তি তার দিকে ছুটে গিয়ে একাই তার কাছ থেকে বন্দুকটি কেড়ে নিলো এবং নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বহু মানুষের জীবন বাঁচালো।'

এদিকে, বন্দুকধারীকে নিরস্ত্র করার সময় আল আহমেদের শরীরেও গুলি লেগেছে বলে জানা গেছে। তবে, বর্তমানে সে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে এবং তার অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে বলে আহমেদের পরিবার থেকে জানানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানানোসহ ইহুদী সম্প্রদায় ও অস্ট্রেলিয়া সরকারের পাশে থাকার অঙ্গীকার জানিয়েছেন বিভিন্ন দেশের নেতারা। 

সূত্র : ডয়চে ভেলে।