অন্যান্য

টেক্সাসে আকস্মিক বন্যায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৯১

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০১:২২, ৮ জুলাই ২০২৫

টেক্সাসে আকস্মিক বন্যায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৯১

বন্যার প্রবল স্রোত গাড়ি এমনকি বাড়িও ভাসিয়ে নিয়ে যায়। ছবি : সিএনএন।

টেক্সাসে সৃষ্ট আকস্মিক ভয়াবহ বন্যায় এ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৯১ জনে দাঁড়িয়েছে। গোয়াদালুপ নদী প্লাবিত হয়ে সৃষ্ট এ বন্যায় গ্রীষ্মকালীন একটি ক্যাম্পের ২৭ শিশু ও কর্মী নিহত হয়েছে। গতকাল সোমবার ক্যাম্প থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়। 

তবে নিহতের সংখ্যা নিশ্চিতভাবে আরও বাড়তে পারে বলে সতর্কবার্তা জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। মূলত, এখনও বন্যা টেক্সাসের মধ্যাংশে অবস্থান করায় এবং আরও বৃষ্টির আশঙ্কায় এ সতর্কবার্তা জানানো হয়।

এদিকে, ক্যাম্পে অবস্থান করা শিশু ও কর্মীদের মৃত্যুতে আয়োজকদের মধ্যে শোকবহ অবস্থা বিরাজ করছে বলে এক বিবৃতিতে জনানো হয়। 

‘ক্যাম্প মিসটিক’ এক বিবৃতিতে জানায়, ‘বিরামহীনভাবে আমাদের ক্যাম্পের নিখোঁজ মেয়ে শিশুদের উদ্ধারে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া স্থানীয় বাসিন্দা ও রাজ্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমরা সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি।’ 

এতে আরও বলা হয়, ‘এলাকার বাসিন্দাসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে নিয়োজিত কর্মীদের প্রতি আমরা আমাদের কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।’ 

গত শুক্রবার সংঘটিত আকস্মিক এ বন্যায় মূলত নদীর আশেপাশের এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি নিহতের ঘটনা ঘটে। এতে ২৮ শিশুসহ মোট ৭৫ জন নিহত হয় বলে কের কাউন্টির শেরিফ ল্যারি লেইথা জানান। 

মূলত, প্রচণ্ড বৃষ্টিপাতের কারণে এক ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে গোয়াদালুপ নদীর পানি প্রায় ২৬ ফুটেরও বেশি উচ্চতায় প্লাবিত হয়ে আকস্মিক এ বন্যার সৃষ্টি হয়। এ সময় বন্যার পানি প্রচণ্ড গতিতে টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের কেরভিল শহরের মাঝখান দিয়ে প্লাবিত হয় এবং ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করে।

এর মধ্যে গোয়াদালুপ নদী তীরবর্তী ক্যাম্প মিসটিক সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। শতাব্দী প্রাচীন এ ক্যাম্পটি মূলত মেয়ে শিশুদের গ্রীষ্মকালীন অবকাশযাপনের জন্য  (সামার ক্যাম্প) বেশ জনপ্রিয়। 

কিন্তু, রাতভর তীব্র বৃষ্টির কারণে বন্যার পানি বেড়ে গাছের উপর এবং কেবিনের ছাদ সমান উচ্চতায় উঠে যায়। এ অবস্থায় রাতে ক্যাম্পে ঘুমিয়ে থাকা শিশুদের অনেকেই বন্যার প্রবল স্রোতে ভেসে যায়। এ সময় চারপাশে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। 

এদিকে, আকাশে এখনও প্রচুর ভারী মেঘ থাকায় আবারও আকস্মিক বন্যার সৃষ্টি হতে পারে বলে রবিবার জাতীয় আবহাওয়া অধিদফতর থেকে সতর্ক করা হয়। 

এ অবস্থায় কেরভিলসহ আশেপাশের অন্যান্য শহরও সম্ভাব্য এ বন্যায় প্লাবিত হতে পারে বলে টেক্সাসের গভর্নর গ্রেগ অ্যাবোট সতর্ক করেছেন। ফলে, নদী তীরবর্তী বাসিন্দাদের দ্রুত নিরাপদে সরে যাওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।

উল্লেখ্য, ভয়াবহ এ বন্যা সম্পর্কে পর্যাপ্ত সতর্কবার্তার ঘাটতি ছিলো বলে সমালোচনার মুখে পড়েছে ট্রাম্প সরকার। আর, এটিই ব্যাপক হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির ঘটনার জন্য দায়ী বলে অভিযোগ করছে বিরোধী ডেমোক্রেটিকরা। 

এ পরিস্থিতিতে রবিবার কের কাউন্টির জন্য বড় আকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা তহবিলে স্বাক্ষর করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

সূত্র : ডয়চে ভেলে, বিবিসি।