অন্যান্য

সাহারা মরুভ‍‍‍‍ূমির ধুলায় কমলা এথেন্সের আকাশ

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ২২:২১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪;  আপডেট: ২২:২৮, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

সাহারা মরুভ‍‍‍‍ূমির ধুলায় কমলা এথেন্সের আকাশ

আকাশের কমলা রঙ নাটকীয় আবহ তৈরি করলেও তা ফুসফুসের জন্য ক্ষতিকর বলে সতর্ক করা হয়েছে।

গ্রিসের রাজধানী এথেন্সের আকাশ কমলা রঙ ধারণ করেছে। সাহারা মরুভূমি থেকে উড়ে আসা ধুলি ঝড়ের কারণে গতকাল মঙ্গলবার থেকেই শহরটিতে এ অবস্থার সৃষ্টি হতে থাকে। আজ বুধবার তা প্রায় সারা গ্রিসের আকাশে ছড়িয়ে পড়ে। আগামী বুধবারের আগে‍ দেশটির আকাশ পুরোপুরি পরিষ্কার হবেনা বলে গ্রিসের আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে জানানো হয়েছে।

বর্তমানে এ কমলা ধুলার মেঘ এথেন্সের উত্তরের থেসালোনিকি পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে। এ অবস্থায় ফুসফুসের সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের যতোক্ষণ সম্ভব ঘরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

একইসঙ্গে, বাইরে বের হলে দূষণ প্রতিরোধী মাস্ক পড়ারও আহ্বান জানানো হয়। এছাড়া, আকাশ পরিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত এসব এলাকার বাসিন্দাদের ঘরের বাইরে শরীরচর্চা না করারও পরামর্শ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

এদিকে, গত মার্চের শেষ এবং চলতি এপ্রিলের শুরুতেও এ ধরনের ধুলার মেঘে আচ্ছন্ন হয়েছিলো গ্রিসের আকাশ। এমনকি তা সুইজারল্যান্ড ও ফ্রান্সের দক্ষিণাংশেও ছড়িয়ে পড়ে।

কিন্তু, ২০১৮ সালের পর এবারই প্রথম এ ধরনের ধুলার কারণে গ্রিসে সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে দেশটির আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে জানানো হয়।

এদিকে, এবার এ ধুলার মেঘের সঙ্গে যোগ হয়েছে গ্রিসের দক্ষিণাঞ্চলের ভয়াবহ উত্তপ্ত আবহাওয়া। এর ফলে এসব এলাকার তাপমাত্রা বর্তমানে অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে।

আগামী বুধবার নাগাদ গ্রিসের আকাশ পরিষ্কার হতে শুরু করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

গতকাল মঙ্গলবার এসব এলাকায় গত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ২৫টি দাবানলের খবর জানিয়েছে দেশটির অগ্নিনির্বাপক সংস্থা। এর মধ্যে গ্রিসের ক্রিট নামক এলাকার নৌবাহিনীর একটি ঘাাঁটির কাছে আগুন লাগার কথা জানানো হয়।

সে সময় ওই স্থানের তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছায়। এ অবস্থায় তখন ওই এলাকার বাড়িঘর ও কিন্ডারগার্টেনগুলো খালি করে দেওয়া হয় বলে স্থানীয় গণমাধ্যম জানায়।

সাহারা মরুভূমি থেকে ইউরোপের দিকে এভাবে ধুলার মেঘ উড়ে আসার বিষয়টি ব্যতিক্রম কিছু নয়। সময়ভেদে এটি কম বা বেশি হয়ে থাকে। কিন্তু, সাধারণত বসন্ত বা শরৎকালেই এটি বেশি ঘটতে দেখা যায়।

তবে, এবার লিবিয়ায় সৃষ্ট নিম্নচাপের কারণে ব্যাপক দক্ষিণা ঝড়ো বাতাস তৈরি হয়। এটিই মূলত উত্তর আফ্রিকা থেকে ধুলাবালির মেঘ পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় এলাকা বিশেষ করে গ্রিসে উড়িয়ে আনে।

একইসঙ্গে, দক্ষিণা এ ঝড়ো হাওয়া মরুভূমির গরম বাতাসও উড়িয়ে এনেছে। এর ফলে এপ্রিলের শেষ দিকে এসে গ্রিস ও এর আশেপাশের দ্বীপাঞ্চলগুলোতে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেকটাই বেড়ে গেছে।

এর মধ্যে দেশটির ক্রিটের চানিয়া এলাকায় তাপমাত্রা রেকর্ড ৩৬ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠে।

তবে, আগামী বুধবার নাগাদ ঠাণ্ড, পরিচ্ছন্ন, নির্মল বাতাস পশ্চিম দিক থেকে প্রবাহিত হতে শুরু করবে। এর ফলে, এ ধুলার মেঘ আরও পূর্ব দিকে সরে যাবে।

বাসিন্দাদের ঘরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হলেও ব্যতিক্রমী আকাশ অনেকেরই আগ্রহের বিষয়ে পরিণত হয়েছে।

এভাবে, আগামী সপ্তাহের শেষ নাগাদ পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় এলাকাজুড়ে পরিচ্ছন্ন, নির্মল বাতাস বইতে শুরু করবে এবং তাপমাত্রাও প্রায় স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যাবে বলে স্থানীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে জানানো হয়।

উল্লেখ্য, সাহারা মরুভূমি থেকে প্রতি বছর ৬০ থেকে ২০০ মিলিয়ন টন খনিজ ধুলা নির্গত হয়। এর অধিকাংশই আবার খুব দ্রুত মাটিতে মিশে যায়।

কিন্তু, এর মধ্যে ক্ষুদ্র কিছু কণা অনেকদূর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। এমনকি মাঝে মাঝে তা ইউরোপ পর্যন্ত চলে আসে।

সূত্র : বিবিসি।