রাজনীতি

সিরিয়ায় দ্রুজ ও বেদুঈনদের মধ্যে সংঘর্ষ : নিহত কমপক্ষে ৩০

রাজনীতি ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৩:১৭, ১৪ জুলাই ২০২৫;  আপডেট: ০১:১০, ১৫ জুলাই ২০২৫

সিরিয়ায় দ্রুজ ও বেদুঈনদের মধ্যে সংঘর্ষ : নিহত কমপক্ষে ৩০

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সহিংসতাপূর্ণ এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়।

সিরিয়ার দক্ষিণাংশে আদিবাসী সুন্নী বেদুঈন যোদ্ধা ও দ্রুজ সেনাদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে কমপক্ষে ৩০ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। 

গতকাল রবিবার সুইয়দা প্রদেশের দ্রুজ অধ্যুষিত একটি শহরে প্রথম এ সহিংসতার শুরু হয়। এর দুইদিন আগেই দামেস্কগামী একটি মহাসড়ক থেকে এক দ্রুজ ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়। 

এ অঞ্চলটি বেদুঈনদের আদি নিবাস হলেও প্রায়ই দ্রুজ যোদ্ধারা এখানে হামলা চালাতো। একসময় পুরো এলাকাই তারা নিজেদের দখলে নেয়। 

বর্তমান পরিস্থিতিকে ‘বিপদজনক’ উল্লেখ করে ওই অঞ্চলের পরিস্থিতি শান্ত করতে নিরাপত্তা বাহিনী নিয়োগ করা হয়েছে বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়। 

এদিকে, সহিংসতা শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যেই এটি সুইয়দা প্রদেশের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় আদিবাসীরা দ্রুজদের শহর ও গ্রামে একের পর এক হামলা চালাতে থাকে। 

এ সময় সুমায় ও মাজরা শহরে বোমা হামলার ঘটনা ঘটে বলে সিরিয়াভিত্তিক হিউম্যান রাইটস সূত্রে জানা যায়। এছাড়া, তায়রাহ গ্রামে প্রবেশ করে হামলাকারীরা কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিলে গ্রামবাসীরা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয় বলে যুক্তরাজ্যভিত্তিক পর্যবেক্ষন সংস্থা জানায়। 

এসব সহিংসতায় এ পর্যন্ত ২৭ দ্রুজ এবং ১০ বেদুঈন নিহত হয় বলে এসব সংস্থা সূত্রে জানা গেছে। 

সিরিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে বলা হয়, ‘মূলত পর্যাপ্ত সরকারি সংস্থা না থাকা, সহিংসতা বাড়ানোর নানা অপচেষ্টা, নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়া এবং বার বার অনুরোধ সত্ত্বেও স্থানীয়দের শান্ত থাকতে না পারাই বিপদজনক এ ঘটনা ঘটার জন্য দায়ী।’ 

এ অবস্থায় সংঘর্ষ বন্ধে এবং আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে প্রতিরক্ষা ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে নিরাপত্তা বাহিনী ওই এলাকায় সরাসরি হস্তক্ষেপ করেছে বলেও জানানো হয়। 

তবে, পূর্বাঞ্চলের দেররা প্রদেশে নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করার পরও আজ সোমবার সুইয়দায়ের প্বার্শবর্তী গ্রাম এলাকায় নতুন করে সহিংসতার ঘটনা ঘটে বলে জানা যায়। এ সময় গ্রামগুলোতে ড্রোন হামলার ঘটনাও ঘটে। 

এর আগে চলতি বছরের মে মাসের শুরুর দিকে সিরিয়ায় ১৩০ জনেরও বেশি নিহতের ঘটনা ঘটে। মূলত, রাজধানী দামেস্কের শহরতলী ও সুইয়দা প্রদেশে দ্রুজ বন্দুকধারী, নিরাপত্তা বাহিনী এবং এর মিত্র সুন্নী ইসলামপন্থী যোদ্ধাদের মধ্যে সংঘর্ষের জেরে হতাহতের এ ঘটনা ঘটে। 

এ পরিস্থিতিতে সে সময় সরকার থেকে দ্রুজ যোদ্ধাদের সঙ্গে একটি চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী সুইয়দা প্রদেশের স্থানীয় নিরাপত্তা বাহিনীতে দ্রুজ যোদ্ধাদের থেকে পদমর্যাদা অনুযায়ী লোকবল নিয়োগের বিষয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হয়। 

উল্লেখ্য, সিরিয়ায় বর্তমানে বহু সংখ্যালঘু সম্প্রদায় রয়েছে, যাদের রয়েছে আলাদা সংস্কৃতি ও ধর্মীয় বিশ্বাস। এ ক্ষেত্রে, দ্রুজ সম্প্রদায় হচ্ছে শিয়া মুসলিমদের একটি উপশাখা। তাদের রয়েছে সম্পূর্ণ ব্যতিক্রমধর্মী গোত্র পরিচয় ও ধর্ম বিশ্বাস। 

সূত্র : বিবিসি।