অন্যান্য

বাধ্যতামূলক মৃত্যুদণ্ড বাতিল করতে যাচ্ছে মালয়েশিয়া

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ২২:৩৯, ৩ এপ্রিল ২০২৩;  আপডেট: ০০:১৫, ৪ এপ্রিল ২০২৩

বাধ্যতামূলক মৃত্যুদণ্ড বাতিল করতে যাচ্ছে মালয়েশিয়া

২০১৮ সাল থেকে মালয়েশিয়ায় মৃত্যুদণ্ডের ওপর স্থগিতাদেশ কার্যকর রয়েছে।

সর্বোচ্চ সাজা হিসেবে বাধ্যতামূলক মৃত্যুদণ্ডের বিধান বাতিল করতে যাচ্ছে মালয়েশিয়া। এজন্য বিদ্যমান আইন সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে দেশটি। হত্যা ও জঙ্গিবাদসহ ১১টি গুরুতর অপরাধের জন্য বাধ্যতামূলক এ শাস্তির প্রথা বাতিল করতে আজ সোমবার দেশটির সংসদে ভোট গ্রহণ করা হয়েছে। ভোটে প্রাথমিকভাবে এ বিষয়ক প্রস্তাবটি পাস হয়েছে।

নতুন আইনে গুরুতর অপরাধের ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক মৃত্যুদণ্ডের বদলে সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে ৪০ বছর পর্যন্ত মেয়াদে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা বেত্রাঘাতের মতো শারীরিক শাস্তির আদেশ দেবে দেশটির আদালত। এ ছাড়া বিশেষ বা ব্যতিক্রম ঘটনার ক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ডের সিদ্ধান্ত বিচারকের আওতায় থাকবে।

২০১৮ সাল থেকে মালয়েশিয়ায় মৃত্যুদণ্ডের ওপর স্থগিতাদেশ কার্যকর রয়েছে। সংসদে ভোটে প্রাথমিকভাবে পাস হলেও চূড়ান্তভাবে তা গৃহীত হতে হলে সংসদের উচ্চকক্ষের সম্মতির প্রয়োজন রয়েছে। তবে সেখানেও যথেষ্ট সমর্থন পাওয়া যাবে বলেই আশা করছেন আইনজীবীরা।

নতুন আইন পাস হলে দেশটিতে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ কার্যকরের অপেক্ষায় থাকা ১ হাজার ৩০০ জনের বেশি অপরাধী এ দণ্ড থেকে রেহাই পাবে।

মালয়েশিয়ার আইনবিষয়ক উপ-মন্ত্রী রামকারপাল সিং সোমবার বলেন, 'একবার মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকর হয়ে গেলে তা আর বাতিলের কোনও সুযোগ নেই। এ ছাড়া এ দণ্ড প্রয়োগ করেও গুরুতর অপরাধগুলো কমিয়ে আনা যাচ্ছে না।'

মালয়েশিয়ায় বর্তমানে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়া যায়, এমন ৩৪ রকমের অপরাধ রয়েছে। এসবের মধ্যে সোমবার পর্যন্ত ১১টি অপরাধে মৃত্যুদণ্ড বাধ্যতামূলক ছিলো।

মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইসমাইল সাবরি ইয়াকুবের নেতৃত্বাধীন সরকার গত বছরের জুনে প্রথম বাধ্যতামূলক শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ডের বিধান বাতিলের ঘোষণা দেয়। এর পর থেকেই এ নিয়ে আইনি সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া শুরু হয়। তবে এ শাস্তি বাতিল করতে গত প্রায় এক দশক ধরেই দেশটিতে বিতর্ক চলেছে। গত এক বছরের রাজনৈতিক বাকবিতণ্ডার পর গত সপ্তাহে মালয়েশিয়ার সংসদ এ সংক্রান্ত দুটি গুরুত্বপূর্ণ আইন সংস্কারের জন্য সংসদে বিল উত্থাপন করে।

মানবাধিকার সংস্থাগুলো এ উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেছে, মৃত্যুদণ্ড বাতিলের উদ্যোগ নেওয়ার মধ্য দিয়ে মালয়েশিয়া এবং সার্বিকভাবে পূর্ব এশিয়া একধাপ সামনে এগিয়ে গেল। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলেছে, মালয়েশিয়ার এ সিদ্ধান্ত প্রতিবেশী দেশগুলোকেও প্রভাবিত করবে বলে তারা আশাবাদী।

উল্লেখ্য, মাদক চোরাচালানের অপরাধে গত বছর ১১ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে মালয়েশিয়ার প্রতিবেশী দেশ সিঙ্গাপুর। এ ছাড়া কয়েক দশকের মধ্যে প্রথম ঘটনা হিসেবে গত বছরই মিয়ানমার সরকার গণতন্ত্রপন্থী চার কর্মীর মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকর করে।

সরকারি তথ্যমতে, ১৯৯২ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ১ হাজার ৩১৮ জনকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে মালয়েশিয়া।

সূত্র : বিবিসি।