রাজনীতি

সরকারের বিতর্কিত নীতি

ট্রাম্পবিরোধী প্রতিবাদে উত্তাল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র

রাজনীতি ডেস্ক

প্রকাশিত: ২২:৩৬, ২০ এপ্রিল ২০২৫

ট্রাম্পবিরোধী প্রতিবাদে উত্তাল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র

শুধু শনিবারই যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ৪০০ প্রতিবাদ-সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে প্রতিবাদ বিক্ষোভে রাস্তায় নেমে এসেছে হাজার হাজার মানুষ। গতকাল শনিবার দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে প্রতিবাদ-সমাবেশ করে বিক্ষুব্ধ জনতা। বিভিন্ন ইস্যুতে দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কঠোর নীতির প্রতিবাদে এ বিক্ষোভ-সমাবেশের আয়োজন করে মার্কিন নাগরিকরা। 

এ সময় ট্রাম্পের কঠোর অভিবাসন নীতি, বাজেটে কাঁট-ছাঁট, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়সহ গণমাধ্যম ও আইনি প্রতিষ্ঠানগুলোকে চাপে ফেলা এবং গাজা ও ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে তার অবস্থানের তীব্র সমালোচনা করে বিক্ষুব্ধ জনতা।

শনিবারের এ প্রতিবাদ-কর্মসূচীর দুই সপ্তাহ আগেও ট্রাম্পের এসব নীতির সমালোচনা করে একবার বিক্ষোভ মিছিল করে মার্কিন জনগণ। তবে, এবারের বিশাল পরিসরের তুলনায় সেটি ছিলো অনেক ছোট আকারের। 

বর্তমানের এ প্রতিবাদ-কর্মসূচীকে উল্লেখ করা হচ্ছে ‘দ্য গ্রুপ অব ৫০৫০১’ হিসেবে। এর মানে হচ্ছে - একক একটি আন্দোলনের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি অঙ্গরাজ্যে ৫০টি প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করা।

আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্য হচ্ছে এর মধ্য দিয়ে ট্রাম্প এবং তার আস্থাভাজন ধনিকগোষ্ঠীর গণতন্ত্র-বিরোধী এবং অবৈধ উদ্যোগের বিরুদ্ধে  দ্রুততার সঙ্গে গণজমায়েতের মাধ্যমে একে নসাৎ করে দেওয়া। 

মেইন অঙ্গরাজ্যে নিজ পরিবারকে নিয়ে সমাবেশে যোগ দিতে আসা এক প্রতিবাদকারী এ বিষয়ে বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েট প্রেসকে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা রক্ষার প্রশ্নে এটি খুবই কঠিন একটি সময়। আমি চাই আমার সন্তানেরা এ দেশের ইতিহাস সম্পর্কে জানুক। তারা এটা বুঝতে শিখুক যে কখনো কখনো স্বাধীনতা রক্ষায় আমাদের যুদ্ধও করতে হতে পারে।’ 

কিছু প্রতিবাদকারী ট্রাম্পকে একনায়ক হিটলারের সঙ্গেও তুলনা করেন।

এ ক্ষেত্রে ট্রাম্পের অভিবাসী বিতাড়িত করার নীতির বিরোধীতা করে দেশটির শরণার্থীদের পক্ষে স্লোগান দেয় প্রতিবাদকারীরা। একইসঙ্গে, কাজ হারানো সরকারি চাকরিজীবী এবং তহবিল বাতিল হয়ে যাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পক্ষেও অবস্থান নেয় তারা। 

এ সময় নিউ ইয়র্কে প্রতিবাদকারীরা ‘আমেরিকায় কোনো রাজা চাই না’ বলে স্লোগান দেয়। এছাড়া, ট্রাম্প দেশের গণতন্ত্রকে হুমকীর মধ্যে ফেলছে এবং এর মধ্য দিয়ে এ দেশের মতাদর্শ বিনষ্ট হচ্ছে বলে শঙ্কা জানায় রাজধানী ওয়াশিংটনে প্রতিবাদ-সমাবেশে যোগ দিতে আসা আন্দোলনকারীরা। 

এ সময় বিভিন্ন জায়গায় ফিলিস্তিন ও ইউক্রেনের পক্ষেও তাদের স্লোগান দিতে দেখা যায়। অন্যদিকে, সান ফ্রান্সিসকোতে প্রতিবাদকারীদের ‘অভিসংশন+হটাও’ (ইম্পিচ+রিমুভ) স্লোগান দিতে দিতে মিছিল করতে দেখা যায়। এ সময় অনেকে উল্টো করে মার্কিন পতাকা বহন করেন, যা মূলত দুঃখ-দুর্দশা বোঝাতে ব্যবহার করা হয়। 

উল্লেখ্য, দ্বিতীয়বারের মতো প্রেসিডেন্ট হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতা গ্রহণের পর পরই ট্রাম্প ও তার অন্যতম সহযোগী ধনকুবের ইলন মাস্ক বিভিন্ন বিতর্কিত কর্মসূচী বাস্তবায়ন শুরু করেন।

এর মধ্যে সরকারি ব্যয় কমাতে ২ লাখ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা, অভিবাসীদের দেশ থেকে বের করে দেওয়া, ইউএসএউডের মতো আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থায় অর্থায়ন বন্ধ করা ও নিজ দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে তহবিল কমানোর মতো আগ্রাসী উদ্যোগ উল্লেখযোগ্য। 

সূত্র : ডয়চে ভেলে।