ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে পর্যটকদের উপর বন্দুকধারীর হামলা
রাজনীতি ডেস্ক
প্রকাশিত: ২২:৪৮, ২২ এপ্রিল ২০২৫; আপডেট: ২২:৫৬, ২২ এপ্রিল ২০২৫

হামলার ঘটনার পর চেকপোস্ট বসিয়ে গাড়ি চেক করে ভারতের সেনাবাহিনী।
ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে পর্যকটদের উপর হামলা চালিয়েছে বন্দুকধারীরা। এদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। আজ মঙ্গলবার সংঘাতময় এলাকার ৫ কিলোমিটার দূরের পর্যটক শহর পেহেলগামে হামলার এ ঘটনা ঘটে।
এ বিষয়ে এ অঞ্চলের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আব্দুল্লাহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত এক বার্তায় বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে সাধারণ জনগণের উপর সংঘটিত হামলার ঘটনার মধ্যে এটিই এ পর্যন্ত সবচেয়ে ভয়াবহ।’
তিনি আরও বলেন, ‘নিহতের সংখ্যা সম্পর্কে আমরা এখনও নিশ্চিত নই, তাই এ বিষয়ে এখনও বিস্তারিত কিছু বলা যাচ্ছে না।’
এদিকে, এখনও কোনো পক্ষ থেকেই হামলার দায় স্বীকার করা হয়নি। তবে, হামলাকারীদের খুঁজে বের করতে পুলিশ অভিযান শুরু করেছে। অন্যদিকে, আহতদের হামলার ঘটনার পর পরই হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
বর্তমানে সৌদি আরব সফরে থাকা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী একে ভয়াবহ হামলা হিসেবে অভিহিত করে ‘অপরাধীকে অবশ্যই বিচারের আওতায় আনা হবে বলে’ অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
এদিকে, হামলার স্থান পরিদর্শনে ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের শ্রীনগরের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সামাজিকমাধ্যম এক্সে এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘হামলাকারীদের ভয়াবহ পরিণাম ভোগ করতে হবে।’
পর্যটকদের উপর সংঘটিত এ হামলাকে কাপুরুষোচিত বলে উল্লেখ করেছেন কাশ্মীরের গুরুত্বপূর্ণ বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা মিরওয়াজ উমর ফারুখ। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এ ধরনের সহিংসতা অনাকাঙ্খিত এবং কাশ্মীরের নৈতিকতা পরিপন্থী। কারণ, কাশ্মীর এমন একটা অঞ্চল যেখানে পর্যকদের সব সময় সাদর অভ্যর্থনা জানানো হয়। আমরা এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’
উল্লেখ্য, কাশ্মীরের আলাদা দুটি অংশে ভারত ও পাকিস্তান উভয়েরই প্রশাসনিক কার্যক্রম চালু রয়েছে। তবে, উভয় দেশই পুরো অঞ্চলটি নিজেদের বলে দাবি করে।
এক্ষেত্রে, ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের মুসলিমরা বিদ্রোহীদের মতোই এ অঞ্চল হয় পাকিস্তানের আওতাধীন থাকবে বা পুরো স্বাধীন হয়ে যাবে, এ ধারণায় বিশ্বাসী।
এদিকে, এ বিদ্রোহী দলগুলোকে পাকিস্তান সহায়তা দিয়ে থাকে বলে ভারত থেকে অভিযোগ করা হয়। কিন্তু, এ অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছে পাকিস্তান।
এ অবস্থায়, ভারতের বর্তমান ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার ২০১৯ সালে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের আধা-স্বায়ত্ত্বশাসন ব্যবস্থা বাতিল করে একে জম্মু-কাশ্মীর এবং লাদাখ - এ দুটি প্রশাসনিক অঞ্চলে বিভক্ত করে। এর পর থেকেই এ অঞ্চলে হামলার ঘটনা ব্যাপক হারে বেড়ে যায়।
চলতি মাসের শুরুতেই নিরাপত্তা বাহিনী ও সন্দেহভাজন বিদ্রোহী দলের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটে। এতে চার সেনা কর্মকর্তাসহ মোট ছয়জন নিহত হয়।
তবে, গত বছরের জুনের পর এ অঞ্চলে পর্যটকদের উপর এবারই আবার হামলার কোনো ঘটনা ঘটলো। সে সময় হামলাকারীরা হিন্দু পুণ্যার্থীদের বহনকারী একটি বাসে হামলা চালিয়ে ৯ জনকে হত্যা করে।
সূত্র : আল-জাজিরা।