রাজনীতি

ইউক্রেনে হামলার পর পুতিন-জিনপিং প্রথম সাক্ষাৎ

রাজনীতি ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৩:৪২, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২২;  আপডেট: ০১:০৯, ২৯ অক্টোবর ২০২২

ইউক্রেনে হামলার পর পুতিন-জিনপিং প্রথম সাক্ষাৎ

পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে দূরত্ব বাড়িয়ে নিজেদের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরালো করছে চীন ও রাশিয়া।

চীনের প্রধানমন্ত্রী শি জিনপিংয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। উজবেকিস্তানে আয়োজিত এক আঞ্চলিক সম্মেলনে আজ বৃহস্পতিবার সাক্ষাৎ হয় এ দুই নেতার। ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পর এটাই চীনা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পুতিনের প্রথম সাক্ষাতের ঘটনা।

এ সময় ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে চীনের 'ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থানের' প্রশংসা করেন পুতিন। অবশ্য, এ ইস্যুতে চীন সতর্কতামূলক অবস্থানে রয়েছে এবং তাদের এ মনোভাব যৌক্তিক বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

সম্মেলনে এক উন্মুক্ত বক্তৃতায় পুতিন এ বিষয়ে বলেন, 'ইউক্রেন সঙ্কট নিয়ে আমাদের চীনা বন্ধুদের ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থানের আমরা প্রশংসা করি। তবে এ নিয়ে আপনাদের বিভিন্ন জিজ্ঞাসা ও উদ্বেগের বিষয়টিও আমরা বুঝতে পারি। আজকের বৈঠকে আমরা অবশ্যই এ বিষয় নিয়ে আরো বিস্তারিতভাবে আমাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করবো। অবশ্য আগেও আমরা এ বিষয়ে আলোচনা করেছি।'

ইউক্রেনের ব্যাপক প্রতিরোধের মুখে সেখানে দখল করা বিভিন্ন এলাকা থেকে রাশিয়া সরে যেতে বাধ্য হওয়ার কয়েকদিন পরই পুতিন চীনের অবস্থান সম্পর্কে এ মন্তব্য করলেন। উল্লেখ্য, গত পাঁচ মাসে রাশিয়া ইউক্রেনের যতো এলাকা দখল করেছিলো, গত এক সপ্তাহে এর চেয়ে অনেক বেশি এলাকার দখল তারা হারায় এবং সেনা প্রত্যাহারে বাধ্য হয়।

এদিকে, চীন কখনোই রাশিয়ার এ অযৌক্তিক হামলার বিরুদ্ধে শক্ত কোনো অবস্থানে যায়নি বা এ নিয়ে দেশটির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক কোনো অভিযোগও আনেনি। বরং ইউক্রেনে হামলার কারণে পশ্চিমা বিশ্ব রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলেও চীন বরাবরের মতোই প্রতিবেশী এ বন্ধু রাষ্ট্রের সঙ্গে অর্থনৈতিক সহযোগিতাসহ দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য রেকর্ড পরিমাণ বাড়িয়ে চলেছে। এমনকি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশদুটির নেতাদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্কও আগের যে-কোনো সময়ের তুলনায় আরো দৃঢ় হয়েছে বলেই মতামত অনেকের।

বৃহস্পতিবারের এ সভায় পুতিন চীন ও রাশিয়ার ক্রমবর্ধমান বাণিজ্যিক সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে দেশদুটির দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ গত বছর ১৪০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে বলে জানান। এ সময় তিনি বলেন, 'আমি এ বিষয়ে আশাবাদী যে চলতি বছরের শেষ নাগাদ আমাদের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ নতুন রেকর্ড গড়বে। আর অদূর ভবিষ্যতে আমরা দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য থেকে আয়ের পরিমাণ ২০০ বিলিয়ন ডলার বা এর চেয়েও বেশি হওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণে সম্মত হয়েছি।'  

উল্লেখ্য, এর আগে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে বেইজিংয়ে শীতকালীন অলিম্পিক চলাকালে পুতিন চীন সফরে যান এবং শি জিনপিংয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ওই সময়ই এ দুই নেতা তাদের 'অবাধ' দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের কথা ঘোষণা করেন এবং 'ন্যাটোর সম্প্রসারণের' বিরুদ্ধে চীন ও রাশিয়ার যৌথ অবস্থান জানিয়ে পাঁচ হাজার শব্দের একটি নথি প্রকাশ করেন।

সূত্র : সিএনএন।