রাজনীতি

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান আট দিনের রিমান্ডে

ইসলামাবাদে সেনা মোতায়েনের নির্দেশ

রাজনীতি ডেস্ক

প্রকাশিত: ২২:৩০, ১০ মে ২০২৩;  আপডেট: ০২:৩৮, ১২ মে ২০২৩

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান আট দিনের রিমান্ডে

গ্রেফতারের ঘটনার প্রতিবাদে পেশোয়ারে রাস্তা আটকে রাখে ইমরান খানের সমর্থকেরা। ছবি : এপি।

পাকিস্তানে গ্রেফতারকৃত সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে আট দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। দুর্নীতির অভিযোগে দায়ের করা মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আজ বুধবার তার আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে দেশটির আদালত।

প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে বেআইনিভাবে রাষ্ট্রীয় উপহার বিক্রির অভিযোগে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা দায়ের করে সরকার। এ মামলায় হাজিরা দিতে গতকাল মঙ্গলবার রাজধানী ইসলামাবাদে হাইকোর্টে যাওয়ার সময় আদালত চত্বর থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

তবে বরাবরের মতো এবারও এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ইমরান খান। তিনি দাবি করেছেন, রাষ্ট্রীয় নিয়ম মেনে আইনি প্রক্রিয়ায় সব কাজ সম্পন্ন হয়েছে এবং তিনি এ ক্ষেত্রে কোনও দুর্নীতি করেননি।

বর্তমানে ইমরান খানকে কঠোর নিরাপত্তায় পুলিশের গেস্টহাউসে রাখা হয়েছে এবং এটিকেই আদালত কক্ষ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।

এদিকে তার গ্রেফতারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে উঠেছে পুরো পাকিস্তান। ইমরান খানকে গ্রেফতারের পরপরই এ ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে সমর্থকদের প্রতি আহ্বান তার দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)। এর পরপরই রাস্তায় নেমে আসে দলটির সমর্থকরা।

এ সময় পাকিস্তানের বিভিন্ন শহরে শুরু হয় নিরাপত্তা বাহিনী ও পিটিআইয়ের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিও ফুটেজে আন্দোলনকারীদের লাহোরের সেনানিবাসে ঢুকে সেখানকার সম্পত্তি নষ্ট করতে দেখা যায়।

এ ছাড়াও রাস্তায় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় এরই মধ্যে পাকিস্তানজুড়ে এ পর্যন্ত প্রায় আটজন নিহত হয়েছে। প্রায় ১ হাজার জনকে আটক করা হয়েছে বলেও বিভিন্ন গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে।

এর মধ্যে দেশটির খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় ৪ জন নিহত হয়েছেন বলে প্রদেশের রাজধানী পেশোয়ারের হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়। এ ঘটনায় আরও ২৫ জনের বেশি আহত হয়েছেন বলেও জানানো হয়।

এ অবস্থায় রাষ্ট্রীয় সম্পদের আর কোনও ক্ষতি করা হলে এর পরিণতি ভয়াবহ হবে বলে সরকার থেকে পিটিআই সমর্থকদেরকে সতর্ক করা হয়েছে। একইসঙ্গে ৯ মে দিনটিকে 'কালো দিবস' বলে অ্যাখ্যা দিয়েছে পাকিস্তান সরকার।

এদিকে পরিস্থিতি সামাল দিতে আজ সন্ধ্যায় রাজধানী ইসলামাবাদে সেনা মোতায়েন নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে সমর্থকদের মধ্যে যাদের এরই মধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং আন্দোলনকারীদের মধ্যে যারা সহিংসতা ও উস্কানিমূলক কাজের সঙ্গে জড়িত রয়েছে তাদের দেশের সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায় বিচার করা হবে বলেও দেশের সংসদে প্রস্তাব পাস করা হয়।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফের নেতৃত্বে সংসদে পরিচালিত এক বৈঠকে আজ এ প্রস্তাব পাস করা হয়েছে। এ সময় সেনাবাহিনীর সম্পদ বিনষ্টকারীদের রাষ্ট্রদ্রোহী বলে সমালোচনা করা হয়।

সূত্র : আল-জাজিরা, বিবিসি।