রাজনীতি

দক্ষিণ কোরিয়ায় আবর্জনাযুক্ত বেলুন পাঠানো স্থগিত উত্তর কোরিয়ার

রাজনীতি ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৩:০২, ২ জুন ২০২৪;  আপডেট: ০০:৪৮, ৩ জুন ২০২৪

দক্ষিণ কোরিয়ায় আবর্জনাযুক্ত বেলুন পাঠানো স্থগিত উত্তর কোরিয়ার

বেলুনের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করছে দক্ষিণ কোরিয়ার সেনাবাহিনী।

দক্ষিণ কোরিয়ায় আপাতত আবর্জনায় ভরা বেলুন পাঠানো স্থগিত করতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে উত্তর কোরিয়া। আজ রবিবার এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। বেশ কয়েকদিন ধরে দেশটির সীমন্তবর্তী এলাকায় এ ধরনের শত শত বেলুন পাঠিয়ে যাচ্ছে দেশটি।

কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা সাময়িকভাবে সীমানার ওপারে ময়লা-আবর্জনা ফেলার কাজটি স্থগিত করলাম। এর কারণ, আমাদের এ কাজের বিশদ পরিকল্পনা আছে।’

তবে, দক্ষিণ কোরিয়া দেশটিতে উত্তর কোরিয়া বিরোধী লিফলেট পাঠালে তারাও আবার আবর্জনায় ভরা বেলুন পাঠানো শুরু করবে বলে সতর্ক করা হয়। এ বিষয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা দক্ষিণ কোরিয়াকে এই অভিজ্ঞতা দিলাম যে, শহরের চারদিকে ময়লা, নোংরা কাগজের টুকরো ছড়িয়ে থাকা কতোটা বাজে একটি ব্যাপার এবং এগুলো পরিষ্কার করা কতোটা ঝামেলার।’

উত্তর কোরিয়ার এ ধরনের কাজকে ‘নিম্নশ্রেণীর’ বলে এর সমালোচনা করেছে দক্ষিণ কোরিয়া। একইসঙ্গে এর পরিণত ভয়াবহ হবে বলেও দেশটির পক্ষ থেকে সতর্ক করা হয়।

এমনকি, উত্তর কোরিয়ার এ কাজের কড়া জবাব দিতে দক্ষিণ কোরিয়ার জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলে বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সীমান্তবর্তী এলাকায় আবারও বিশাল আকারের লাউড স্পিকারের মাধ্যমে উত্তর কোরিয়া বিরোধী প্রচারণা চালানোর মতো কৌশলের বিষয়ে আলোচনা হয়। এর আগেও দক্ষিণ কোরিয়া এ কৌশল বাস্তবায়ন করেছিলো। তবে, ২০১৮ সালে তা স্থগিত করা হয়।

এদিকে, দক্ষিণ কোরিয়ার সেনাবাহিনী বেলুন থেকে ফেলা ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করাসহ এর গতিবিধিও পর্যবেক্ষণ করছে বলে দেশটির পক্ষ থেকে জানানো হয়।

তবে, দক্ষিণ কোরিয়ার এ অভিযোগকে বিদ্রুপ করে এর পাল্টা জবাব দিয়েছে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের বোন কিম ইয়ো জং। একইসঙ্গে, উত্তর কোরিয়ার জনগণ স্বাধীনভাবে তাদের চিন্তা ও মতামত প্রকাশ করতে পারে বলেও দাবি করে দেশটির জনপ্রিয় এ মুখপাত্র।

উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উইনকে আক্রমণ করে অনেকদিন ধরেই দেশটিতে লিফলেট বিতরণ করে আসছে দক্ষিণ কোরিয়া। এ নিয়ে শত্রুভাবাপন্ন এই দুই দেশের মধ্যে প্রায়ই উত্তেজনাকর পরিস্থিতির তৈরি হয়।

মূলত, দক্ষিণ কোরিয়ার রাজনৈতিক কর্মীরা সীমান্তে কড়া সেনা পাহারা থাকার পরও উত্তর কোরিয়ায় উন বিরোধী এসব লিফলেট বিতরণ করে। তবে, দেশটির জনগণকে আকৃষ্ট করতে এর সঙ্গে অর্থ বা চাল দেওয়া হয়। এমনকি, উত্তর কোরীয় জনগণকে আকৃষ্ট করতে অনেক সময় ইউএসবি ড্রাইভে করে দক্ষিণ কোরিয়ার অনেক জনপ্রিয় টিভি নাটকও নিয়ে যাওয়া হয়।

দক্ষিণ কোরিয়ার আইন প্রণেতারা ২০২০ সালে উত্তর কোরিয়ায় বেলুন পাঠানোর বিষয়টিকে অপরাধমূলক কর্মকান্ড বলে অভিহিত করে। তবে, এটি বাক্ স্বাধীনতার উপর হস্তক্ষেপ উল্লেখ করে গত বছর দেশটির সংসদে তা বাতিল করা হয়।

উল্লেখ্য, আনুষ্ঠানিকভাবে ডেমোক্রেটিক পিপলস রিপাবিলক অব কোরিয়া (ডিপিআরকে) নামে পরিচিত উত্তর কোরিয়া চলতি সপ্তাহের শুরু থেকে আবর্জনায় ভরা শত শত বেলুন দক্ষিণ কোরিয়ায় পাঠাতে শুরু করে। এ সময় ময়লা- আবর্জনা ও পয়ঃবর্জ্যে পরিপূর্ণ এসব বেলুন তাদের ‘আনুগত্যের উপহার’ বলে বিদ্রুপ করে দেশটি।

সূত্র : ডয়চে ভেলে।