রাজনীতি

হামাস নেতাদের উপর হামলা চালানো বন্ধ করবে না ইসরায়েল : নেতানিয়াহু

রাজনীতি ডেস্ক

প্রকাশিত: ০০:৩৫, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫;  আপডেট: ০০:৫০, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

হামাস নেতাদের উপর হামলা চালানো বন্ধ করবে না ইসরায়েল : নেতানিয়াহু

গাজা উপত্যকায় একের পর এক হামলা চলমান রেখেছে ইসরায়েল।

হামাস নেতাদের উপর চলমান হামলা বন্ধ করা হবে না বলে জানিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী। প্রতিটি দেশেরই নিজেদের রক্ষার অধিকার রয়েছে বলে উল্লেখ করেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। গতকাল সোমবার জেরুজালেমে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি। 

গত সপ্তাহেই হামাস নেতাদের লক্ষ্য করে কাতারে হামলা চালায় ইসরায়েল। এ নিয়ে সারা বিশ্বের ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে দেশটি। এমনকি কাতারের  ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্রেরও তোপের মুখে পড়ে ইসরায়েল। তবে, তাদের দেশে আর কখনো এ ধরনের ঘটনা ঘটবে না বলে গতকাল রবিবার কাতারকে আশ্বস্ত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। হোয়াইট হাউজ থেকে এ বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। 

আর, এর মাত্র একদিন পরই এ মন্তব্য করলেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী। একইসঙ্গে, এ হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের কোনো সংশ্লিষ্টতা ছিলো না, তারা নিজ দায়িত্বে এ হামলা চালিয়েছে বলেও উল্লেখ করেন নেতানিয়াহু। এদিকে, কাতারে চালানো ইসরায়েলি হামলায় ৬ জন নিহত হলেও তাদের নেতা বেঁচে আছেন বলে হামাসের তরফ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে। 

এ পরিস্থিতিতে বর্তমানে ইসরায়েল সফরে রয়েছেন মার্কিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। পরবর্তীতে তিনি কাতারও সফর করবেন বলে জানা গেছে। এদিকে, কাতারে হামলার ঘটনা ইসরায়েলের সঙ্গে বিদ্যমান যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে কোনো ফাটল ধরাবে না বলে উল্লেখ করেছে উভয় দেশ। এ সময় উভয় দেশই নিজেদের একে অপরের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে উল্লেখ করে। 

তবে, কাতারে ইসরায়েলি হামলার পর এ বিষয়ে একটি সম্মেলনের আয়োজন করেছেন আরব বিশ্বের নেতারা। মূলত, কাতারের প্রতি তাদের সমর্থন প্রকাশ করতেই এ সম্মেলন আয়োজন করা হয়। সম্মেলনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ‘দ্বিমুখী চরিত্র’ বাদ দিয়ে ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডের জন্য দেশটিকে উপর্যুক্ত শাস্তি দেওয়ার আহ্বান জানায় কাতারের প্রধানমন্ত্রী জসিম আল থানি।

মূলত, ২০১২ সাল থেকেই ফিলিস্তিনের গাজাভিত্তিক স্বাধীনতাকামী দল হামাসের রাজনৈতিক প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করে আসছে কাতার। এর অংশ হিসেবে গাজায় চলমান যুদ্ধবিরতিতে ইসলায়েল ও হামাসের মধ্যে চুক্তি সম্পাদনে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছে দেশটি। একইসঙ্গে, ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় মুখ্য কূটনীতিকের ভূমিকাও পালন করে আসছে কাতার। 

ইসরায়েলের অব্যাহত হামলার কারণে প্রতিনিয়ত হাজার হাজার মানুষ গাজা ছেড়ে যেতে বাধ্য হচ্ছে।

তবে, এরইমধ্যে একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে ইসরায়েল, যার মধ্য দিয়ে ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরকে দুই ভাগে বিভক্ত করার উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে দেশটি। এর ফলে মূলত ফিলিস্তিনিদেরও উত্তর ও দক্ষিণ - দুই অংশে ভাগ করে ফেলা হবে। গত বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত একটি প্রকল্পে স্বাক্ষরের পর নেতানিয়াহু বলেন, ‘ফিলিস্তিন নামে কোনো রাষ্ট্র থাকবে না, আমাদের এ প্রতিশ্রুতি আমরা বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছি। এ ভূখণ্ড আমাদের।’

উল্লেখ্য, ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেম দখলের পর সেখানে এ পর্যন্ত ১৬০টি বসতি নির্মান করেছে ইসরায়েল। বর্তমানে এগুলোতে প্রায় ৭ লাখের মতো ইহুদী বসবাস করছে। তবে, আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী এ ধরনের বসতি নির্মাণ অবৈধ। 

মূলত, ১৯৬৭ সালে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধের পর থেকেই ফিলিস্তিন রাষ্ট্র দখল ও সেখানে নিজেদের রাষ্ট্র সম্প্রসারণে নানা ধরনের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল। বর্তমানে গাজা উপত্যকা দখলেও সব ধরনের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে দেশটি। 

তবে, পশ্চিত তীর ও গাজা উপত্যকাসহ পূর্ব জেরুজালেম তাদের আদি নিবাস বা নিজস্ব ভূখণ্ড বলে দাবি ফিলিস্তিনিদের। বর্তমানে সেখানে প্রায় ৩৩ লাখ ফিলিস্তিনি বসবাস করে। 

সূত্র : বিবিসি।