অন্যান্য

চীনে আঘাত হানতে যাচ্ছে সুপার টাইফুন রাগাসা

ফিলিপাইন ও তাইওয়ানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ২২:১৪, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫;  আপডেট: ২২:২১, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

চীনে আঘাত হানতে যাচ্ছে সুপার টাইফুন রাগাসা

সুপার টাইফুন রাগাসার সম্ভাব্য গতিপথ। ছবি : বিবিসি।

চীনের দক্ষিণ উপক‍ূলে আঘাত হানতে যাচ্ছে এ বছরের সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় রাগাসা। আগামীকাল বুধবার চীনের গুয়াংডং প্রদেশে এটি আঘাত হানবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর ফলে প্রদেশটিতে বিপর্যয়কর পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে বলে সতর্ক করেছে কর্তৃপক্ষ। এ পরিস্থিতিতে আজ মঙ্গলবার প্রদেশটি থেকে প্রায় ৩ লাখ ৭০ হাজার বাসিন্দাকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

নিরাপত্তার স্বার্থে কমপক্ষে ১০টি শহরের সব বিদ্যালয়সহ কিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কতা সংকেত বাড়িয়ে ৮ মাত্রায় উন্নীত করেছে হংকং। 

ক্যাটাগরি ৫ মাত্রার হ্যারিকেনের মতো শক্তিশালী সুপার টাইফুন রাগাসাকে ‘ঝড়ের রাজা’ হিসেবে অ্যাখ্যা দিয়েছে চীনের আবহাওয়া অধিদফতর। চীনের পর এটি ভিয়েতনামে আঘাত হানবে এবং সেখানেও হাজার হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। 

ফিলিপাইনে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে আকস্মিক বন্যার সৃষ্টি হয়। ছবি : ডয়চে ভেলে।

এর আগে গতকাল সোমবার ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্রে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিলো ঘণ্টায় ২৮৫ কিলোমিটার। গতকাল রাতব্যাপী এটি তাইওয়ানে তাণ্ডব চালায়। এ সময় ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে দ্বীপটিতে কমপক্ষে ৬ জন আহত হয়। বাতিল হয়ে যায় ১০০ এরও বেশি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট। 

একইসঙ্গে, গতকাল ফিলিপাইনের উত্তরের প্রত্যন্ত একটি দ্বীপেও আঘাত হানে শক্তিশালী এ ঘূর্ণিঝড়টি। এতে এখন পর্যন্ত ১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। তবে, ঘূর্ণিঝড়টি আঘাত হানার আগেই হাজার হাজার পরিবারকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়। 

এছাড়া, রাজধানী ম্যানিলাসহ দেশের বড় একটা অংশের বিদ্যালয় ও সরকারি অফিস-আদালতও বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। 

ঘূর্ণিঝড়ের আঘাত থেকে বাঁচতে রেস্টুরেন্টের দরজায় ভারী পাল্লা লাগানো হচ্ছে। ছবি : ডয়চে ভেলে।

এদিকে, সুপার টাইফুন রাগাসা হংকংয়ের জন্য বড় রকমের হুমকি হিসেবে দেখা দিতে যাচ্ছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন নগরীর প্রাশাসনিক প্রধান এরিক চ্যান। ঝড়ের কারণে হংকংয়ে ৫০০ এরও বেশি ফ্লাইট বাতিল করা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

এ অবস্থায় আজ এর সুপার মার্কেটগুলো থেকে বাসিন্দাদের প্রচুর পরিমাণে তাজা সবজি, রুটি, মাংস ও ইনস্ট্যান্ট নুডুলসের মতো পণ্য কিনতে দেখা যায়। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় আগাম প্রস্তুতি হিসেবে তারা এ উদ্যোগ নিচ্ছেন। 

এদিকে, চীনের দক্ষিণাংশের শহরগুলোর বিভিন্ন দোকানের মালিকেরা ঝড়ের কবল থেকে তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রক্ষা করতে দরজার সামনে বালুর বস্তা দিয়ে আটকে দিচ্ছেন। অনেকে তাদের ঘর ও দোকানের জানালাগুলো আটকে দিচ্ছেন শক্ত টেপ দিয়ে। 

এরইমধ্যে খালি হয়ে গেছে হংকংয়ের বিভিন্ন সুপার শপের জরুরি পণ্যের তাকগুলো। ছবি : বিবিসি।

তবে, ঝড়ের কারণে সৃষ্টি হতে যাওয়া সাগরের উঁচু ঢেউ নিয়ে আতঙ্কিত রয়েছেন উপকূলের বাসিন্দারা। এ অবস্থায় শক্তিশালী এ ঘূর্ণিঝড় সপ্তাহজুড়ে এসব এলাকায় আকস্মিক বন্যা, ভূমিধস ও ঝড়ের তীব্রতা বাড়িয়ে চলবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। 

উল্লেখ্য, হংকংয়ে এর আগে আঘাত হানা সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ছিলো সুপার টাইফুন ম্যাংখুট। ২০১৮ সালে নগরটিতে আঘাত হানা এ ঘূর্ণিঝড়ে প্রায় ২০০ এর মতো মানুষ আহত হয়। এর প্রভাবে জাহাজডুবীসহ অবকাঠামোগত ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। আবহাওয়া অধিদফতরের হিসেবে সে সময় এ ঘূর্ণিঝড়ে নগরীর ক্ষতির পরিমাণ ছিলো ৪৬০ কোটি বিলিয়ন হংকং ডলার। 

সূত্র : বিবিসি, ডয়চে ভেলে।