অন্যান্য

৩ জনে ১ জন জার্মান পুরুষের কাছে নারীর প্রতি সহিংসতা `গ্রহণযোগ্য`

প্রকাশিত: ২০:২৯, ১৪ জুন ২০২৩

৩ জনে ১ জন জার্মান পুরুষের কাছে নারীর প্রতি সহিংসতা `গ্রহণযোগ্য`

বাকবিতণ্ডার মাঝখানে হঠাৎ স্ত্রী বা প্রেমিকার গায়ে `হাত তোলা`কে স্বাভাবিক মনে করেন অনেক জার্মান পুরুষ।

বাকবিতণ্ডার মাঝখানে হঠাৎ স্ত্রী বা প্রেমিকার গায়ে 'হাত তোলা'কে স্বাভাবিক মনে করেন অনেক জার্মান পুরুষ। দেশটির প্রতি ৩ জনে ১ জন মনে করেন, নারী সঙ্গীর প্রতি এ ধরনের সহিংসতা 'গ্রহণযোগ্য'। বেসরকারি সংস্থা প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল জার্মানি পরিচালিত সাম্প্রতিক এক গবেষণায় এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

সংস্থাটির ওই গবেষণার প্রতিবেদন থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সংবাদ মাধ্যম ডয়চে ভেলে রবিবার এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ওই প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

দেশব্যাপী পরিচালিত ওই গবেষণায় ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সী ১ হাজার পুরুষ ও ১ হাজার নারীর ওপর জরিপ চালানো হয়। পুরুষ উত্তরদাতাদের মধ্যে ৩৩ শতাংশ ঝগড়ার সময় নারী সঙ্গীর গায়ে 'হঠাৎ হাত উঠে যাওয়া'কে স্বাভাবিক ও গ্রহণযোগ্য বলে মত দিয়েছেন। মোট ৩৪ শতাংশ পুরুষ অতীতে নারীর প্রতি এমন সহিংস আচরণ করেছেন বলে স্বীকার করেন।
 
জেন্ডার সমতা নিয়ে কাজ করা জার্মান প্রতিষ্ঠান 'ফেডারেল ফোরাম ম্যান'-এর সদস্য কার্স্টেন ক্যাসনার জরিপের এ ফলকে 'অত্যন্ত দুঃখজনক' বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, 'এটি খুবই দুঃশ্চিন্তার বিষয় যে জরিপে অংশ নেওয়া পুরুষরা নারীর প্রতি শারীরিক সহিংসতাকে একটি তুচ্ছ বিষয় বলে বিবেচনা করে। এ অবস্থার পরিবর্তন হওয়া খুবই জরুরি।'

এদিকে এ জরিপে সহিংসতার বিষয় ছাড়াও জেন্ডার ও যৌনতা বিষয়ে অংশগ্রহণকারীদের প্রশ্ন করা হয়। এতে দেখা যায়, উত্তরদাতাদের ৫২ শতাংশ পুরুষ মনে করেন সংসারের প্রধান উপার্জনকারী হবে একজন পুরুষ এবং তার নারী সঙ্গীর (স্ত্রী বা প্রেমিকা) প্রধান দায়িত্ব হবে শুধু সংসার সামলানো।
 
যৌনতার প্রশ্নে দেখা গেছে, উত্তরদাতাদের ৪৮ শতাংশ জনসমক্ষে সমকামিতার প্রকাশকে পছন্দ করেন না এবং এটি তাদের জন্য বিরক্তিকর বলে উল্লেখ করেছেন।

প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল জার্মানির মুখপাত্র আলেকজান্দ্রা চেকার বলেন, 'আমাদের সমাজে মানুষের মনে নারী-পুরুষের ভূমিকা সম্পর্কিত পুরনো ধারণা এখনও রয়ে গেছে।'

উল্লেখ্য, দেশটির পুলিশ বাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, জার্মানিতে ২০২১ সালে ১ লাখ ১৫ হাজারের বেশি নারী তার সঙ্গীর দ্বারা সহিংসতার শিকার হয়েছেন। এ হিসাবে ওই বছর প্রতি ঘণ্টায় ১৩ জন নারী সহিংসতার শিকার হয়েছেন। এ ছাড়া একই বছর ৩০১ জন নারী তার বর্তমান বা সাবেক পুরুষ সঙ্গীর হাতে নিহত হয়েছেন।