ইসরায়েল ও পশ্চিমা দেশের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ
১৭ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিলো হুতি আদালত
রাজনীতি ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৩:০৯, ২৩ নভেম্বর ২০২৫; আপডেট: ০১:২৪, ২৪ নভেম্বর ২০২৫
ইসরায়েল ফিলিস্তিনের গাজায় আক্রমণ শুরু করলে গাজাবাসীর পক্ষে ইসরায়েলে পাল্টা হামলা শুরু করে হুতি বিদ্রোহীরা।
ইয়েমেনের আইনজীবীদের মাধ্যমে ১৭ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে হুতি বিচারকরা। ইসরায়েল ও পশ্চিমাদের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে তাদের এ শাস্তি দেওয়া হয়। ফায়ারিং স্কোয়াডে তাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হবে।
রাজধানী সানায় অবস্থিত বিশেষায়িত অপরাধ আদালত গতকাল শনিবার সকালে এ রায় দেয়। রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১৭ অপরাধীর মৃত্যুদণ্ড জনসম্মুখে কার্যকর করারও নির্দেশ দেওয়া হয়। হুতি পরিচালিত এক গণমাধ্যম এসব তথ্য জানায়।
আদালতের এ রায়ে অভিযুক্ত অপর এক নারী ও এক পুরুষকে ১০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। অপর এক ব্যক্তি নিরপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে খালাস দেওয়া হয়। এ তিনজন মিলিয়ে আদালতে মোট ২০ জনের বিচার করা হয়।
তবে, এ রায়ের বিরুদ্ধে অভিযুক্তদের আপিল করার সুযোগ রয়েছে বলে ওই গণমাধ্যম উল্লেখ করে। ২০২৪ ও ২০২৫ সালে ‘ইয়েমেনের শত্রু দেশের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি’ - নামের এ মামলায় শত্রু দেশ হিসেবে যুক্তরাজ্যের নামও লিপিবদ্ধ করা হয়।
ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ ইয়েমেনের অভিযুক্ত ওই নাগরিকদের সঙ্গে যোগযোগ করতে তাদের গোয়েন্দাদের ইয়েমেনে নিয়োগ দেয় বলে অভিযোগ রয়েছে। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ইসরায়েল বহু সংখ্যক সেনাঘাঁটি, নিরাপত্তা সংস্থার কার্যালয়সহ ইয়েমেনের বিভিন্ন জনসমাগমপূর্ণ স্থানে হামলা চালায়। এতে বহু হতাহতের ঘটনাসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপন ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
অন্যদিকে, ইয়েমেনজুড়ে ব্যাপকহারে যৌথ বিমান হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যও। মূলত, ২০২৩ সালের অক্টোবরে ইসরায়েল ফিলিস্তিনের গাজায় আক্রমণ শুরু করলে গাজাবাসীর পক্ষে ইসরায়েলে পাল্টা হামলা শুরু করে হুতি বিদ্রোহীরা। একইসঙ্গে, লোহিত সাগরে পশ্চিমা জাহাজ লক্ষ্য করেও বেশ কয়েকটি হামলা চালায় তারা।
এসব ঘটনার পরই ইয়েমেনে হুতিদের ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালাতে শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য। তবে, গত মাসে গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাস্তবায়নের পর থেকে হামলা বন্ধ রেখেছে হুতি বিদ্রোহীরা।
এদিকে, ইসরায়েলে হুতিদের হামলা শুরুর পর এর পাল্টা জবাব হিসেবে সে সময় ইয়েমেনে হুতিদের ঘাঁটিসহ বিভিন্ন অবকাঠামো বিশেষ করে জ্বালানি ট্যাংক, বিদ্যুৎকেন্দ্র, গুরুত্বপূর্ণ বন্দর নগরীতে ব্যাপকহারে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। এসব হামলায় ইয়েমেনের বেশ কয়েকজন রাজনৈতিক নেতাসহ ডজনের বেশি মানুষ নিহত হয়।
ইসরায়েলের এক বিমান হামলায় সে সময় সানাভিত্তিক হুতি সরকারের প্রধানমন্ত্রী নিহত হয় বলে গত আগস্টে হুতিদের তরফ থেকে নিশ্চিত করা হয়। আরও কয়েকজন মন্ত্রীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আহমেদ আল-রাহাওয়ির মৃত্যুসংবাদ সে সময় এক বিবৃতিতের মাধ্যমে নিশ্চিত করে হুতি বিদ্রোহীরা।
উল্লেখ্য, এক দশকের বেশি সময় আগে এক সশস্ত্র বিদ্রোহের মধ্য দিয়ে ইয়েমেনের একটি বড় অংশ দখলে নেয় হুতি বিদ্রোহীরা। বর্তমানে হুতি কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে রাজধানী সানাসহ ইয়েমেনের উত্তরাংশের বেশ কিছু এলাকা।
সূত্র : আল-জাজিরা।



