স্বদেশ

রাজধানীর বঙ্গবাজারে আগুন : পুড়েছে কয়েক হাজার দোকান

অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে ১০ বার নোটিস দিলেও গরজ করেননি ব্যবসায়ীরা

স্বদেশ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৬:৩৪, ৪ এপ্রিল ২০২৩;  আপডেট: ১০:৩৩, ৬ এপ্রিল ২০২৩

রাজধানীর বঙ্গবাজারে আগুন : পুড়েছে কয়েক হাজার দোকান

উৎসুক জনতার ভীড় এবং পানির স্বল্পতার কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে দেরি হয়। ছবি : সংগৃহীত।

রাজধানী ঢাকার গুলিস্তান এলাকায় (ফুলবাড়িয়া বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন) বঙ্গবাজারে আজ মঙ্গলবার সকালে আগুন লেগে কয়েক হাজার দোকান পুড়ে গেছে। বাতাসে ছড়িয়ে পড়া আগুনে বঙ্গবাজারসহ আশেপাশের ভবন ও মার্কেটগুলোতেও আগুন লাগে। এতে অন্তত ১২ হাজার দোকার পুড়ে গেছে বলে আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা। তবে এ আগুনের কারণ সম্পর্কে এখনও নিশ্চিতভাবে কিছু জানা যায়নি।

আজ সকাল ৬টা ১০ মিনিটে বঙ্গবাজারে এ আগুনের সূত্রপাত হয়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৪১টি ইউনিট ঘটনাস্থলে যায়। পরে মোট ৫০টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ করে। এ সময় পুলিশসহ অন্যান্য বাহিনী এবং স্থানীয় জনতাও ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে উদ্ধারকাজে অংশ নেয়।

বাতাসে ছড়িয়ে পড়া আগুনে বঙ্গবাজারের কাছেই অবস্থিত পুলিশ সদর দপ্তরের ভবনও কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টার সময় ফায়ার সার্ভিসের ৮ সদস্যসহ মোট ১১ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

এদিকে আগুন নেভাতে দেরি হওয়ার অভিযোগে বঙ্গবাজারের বিপরীত দিকে ফায়ার সার্ভিসের সদর দপ্তরে হামলার ঘটনা ঘটেছে।

তিন কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে দেরি

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন গণমাধ্যমকে জানান, তিনটি কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে তাদের বেগ পেতে হয়েছে। তিনি বলেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে প্রধান বাধা ছিল উৎসুক জনতার ভীড়। এ ছাড়া পানির স্বল্পতা ও বাতাসের কারণেও আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে দেরি হয়েছে।

ফায়ার সার্ভিস সূত্র প্রথমে জানায়, প্রায় সাড়ে ছয় ঘণ্টার চেষ্টায় বেলা ১২টা ৩৬ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। কিন্তু ইফতারের পর হঠাৎ করে আবার আগুন জ্বলে উঠলে সড়কে জমে থাকা পানি দিয়ে সেই আগুন নেভানোর চেষ্টা করে স্থানীয়রা। এ আগুন নেভাতে কাজ করে যাচ্ছে ফায়ার সার্ভিসও।

প্রধানমন্ত্রীর দুঃখ প্রকাশ

বঙ্গবাজারে আগুনের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এদিকে এ ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যদের কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানানো হয়েছে।

বঙ্গবাজার মার্কেটকে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয় ৪ বছর আগে

আগুনের উৎস সম্পর্কে তদন্তের আগে কিছু জানানো যাবে না বলে জানান ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক মো. মাইন উদ্দিন। তবে তিনি বলেন, '২০১৯ সালের ২ এপ্রিল এই ভবন অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে ব্যানার টানিয়েছিলাম। ১০ বার নোটিস দিয়েছি, করণীয় যা যা করেছি। তারপরও ব্যবসা চলছিল।'

রাজধানী ঢাকার সবচেয়ে পুরনো পাইকারি ও খুচরা কাপড়ের বাজার বঙ্গবাজারে একাধিক মার্কেট রয়েছে। সবগুলো মার্কেট একসঙ্গে বঙ্গবাজার নামে পরিচিত। এর মধ্যে শুধু বঙ্গ মার্কেটেই রয়েছে প্রায় ৩ হাজার দোকান। এখান থেকে রাস্তার বিপরীত দিকে রয়েছে এনেক্সকো ও বঙ্গো হোমিও মার্কেট। আগুনের ঘটনায় বঙ্গবাজারের সব মার্কেটসহ এনেক্সকো টাওয়ারের ৫ম থেকে ৭ম তলা পর্যন্তও পুড়েছে। এ মার্কেটের প্রত্যেক তলায় ১১৫টির মতো দোকান রয়েছে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, এ ঘটনায় প্রায় হাজার কোটি টাকার ক্ষতির শিকার হয়েছেন তারা। তবে প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতির হিসাব পরে জানানো হবে বলে ফায়ার সার্ভিস থেকে জানানো হয়েছে।

সূত্র : বাসস, প্রথম আলো, বাংলা ট্রিবিউন ও কালের কণ্ঠ।