রাজনীতি

রাশিয়ার উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দিহান

শান্তিচুক্তিতে অবশ্যই ইউক্রেন ও ইউরোপকে যুক্ত করতে হবে : ইইউ

রাজনীতি ডেস্ক

প্রকাশিত: ২১:৪১, ২০ নভেম্বর ২০২৫;  আপডেট: ২৩:৪০, ২০ নভেম্বর ২০২৫

শান্তিচুক্তিতে অবশ্যই ইউক্রেন ও ইউরোপকে যুক্ত করতে হবে : ইইউ

গতকাল তারনোপিল শহরে হামলার ঘটনায় হতাহতসহ অবকাঠামোগত ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতিও হয়।

ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ সমাপ্তির যেকোনো পরিকল্পনায় অবশ্যই ইউক্রেন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সমর্থন লাগবে বলে জানিয়েছে ইউরোপীয় নেতৃবৃন্দ। যুদ্ধ সমাপ্তির ক্ষেত্রে মার্কিন-সমর্থিত পরিকল্পনা ব্যাপকভাবে রাশিয়াকে সুবিধা দিবে এবং শুধু এ দেশটির চাহিদা পূরণ করবে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেন তারা।

বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে আজ বৃহস্পতিবার ইইউ পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে উপস্থিত হয়ে এসব কথা বলেন তারা। এক্ষেত্রে, দীর্ঘমেয়াদী শান্তি প্রতিষ্ঠায় যেকোনো উদ্যোগকে তারা স্বাগত জানাবেন বলে এ সময় সাংবাদিকদের বলেন ইইউর পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান কাজা কাল্লাস। তিনি আরও বলেন, ‘এ ধরনের যেকোনো পরিকল্পনা বাস্তবায়নে অবশ্যই ইউক্রেন ও ইউরোপীয় দেশগুলোর সমর্থন সমানভাবে প্রয়োজন।’

এ সময় কাল্লাসের কথায় সমর্থন জানান জার্মানি, স্পেন এবং পোল্যান্ডের কূটনীতিকরা। কারণ, বর্তমানে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে ইউরোপের নিরাপত্তা হুমকীর মুখে পড়েছে বলে মন্তব্য করেন পোলিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী র‌্যাডসল স্কিকোর্স্কি। এক্ষেত্রে, সম্ভাব্য চুক্তি সংক্রান্ত আলোচনায় অবশ্যই ইউরোপকে যুক্ত করা হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ঘটনার ভুক্তভোগীদের অবশ্যই নিজেদের রক্ষার অধিকার রয়েছে বলে আমি মনে করি। কিন্তু, আগ্রাসী মনোভাবকারীরাই তা  মানতে চায় না।’

তবে, আজও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ সমাপ্তির যেকোনো পরিকল্পনার বিষয়টি আবারও বাতিল করে দিয়েছে রাশিয়া। কারণ, দেশটির মতে, এ বিষয়ে ইউক্রেনের সঙ্গে যেকোনো ধরনের চুক্তি এ সংঘাতের মূল কারণকেই উপেক্ষা করবে বলে মন্তব্য করে রাশিয়া। একইসঙ্গে, ওয়াশিংটনের সঙ্গেও আপাতত এ সংক্রান্ত আলোচনার কোনো পরিকল্পনা নেই বলেও দেশটি জানায়।

এক্ষেত্রে, ইউক্রেনের শান্তি পরিকল্পনা সংক্রান্ত প্রতিবেদন সম্পর্কে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে জানানো হয়েছে কিনা, সে সম্পর্কে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানায় ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেস্কোভ।

এদিকে, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ সীমানা ছাড়িয়ে ইউরোপের দেশগুলোয় প্রভাব ফেলবে বলে দীর্ঘদিন ধরে নিজেদের আশঙ্কা জানিয়ে আসছে ইউরোপের দেশগুলো। ছায়াযুদ্ধের জন্য রাশিয়া এরইমধ্যে নানা ধরনের কর্মকাণ্ড করেছে বলেও ব্যাপক অভিযোগ করে আসছে ইউরোপীয় নেতারা। কারণ, এরইমধ্যে ইউরোপের বেশ কিছু দেশে বেশ কয়েকবার সাইবার হামলা ও সীমান্তবর্তী এলাকায় ড্রোন হামলা চালিয়েছে রাশিয়া।

এ পরিস্থিতিতে ব্রিটিশ জলসীমার একদম কাছাকাছি বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে রাশিয়ার একটি গোয়েন্দা জাহাজের অবস্থান নিয়ে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে নতুন করে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। জাহাজটি পর্যবেক্ষণে এরইমধ্যে ব্রিটিশ পাইলট পাঠানো হয়েছে। এমনকি, রাশিয়া সীমা লঙ্ঘন করলে তারা সেনা প্রয়োগে দ্বিধা করবে না বলে গতকাল বুধবার সতর্ক করেছে যুক্তরাজ্য।

উল্লেখ্য, গতকাল রাশিয়ার ভয়াবহ এক হামলায় ইউক্রেনের তারনোপিল শহরে কমপক্ষে ২৬ জন নিহত হয়। এ ঘটনার পর পরই তড়িঘড়ি রাশিয়াকে শান্তি প্রস্তাব পাঠায় যুক্তরাষ্ট্র। তবে, এ সম্পর্কে এখনও কোনো মন্তব্য করেনি রাশিয়া।

এদিকে, গতকালের ভয়াবহ এ হামলায় আরও প্রায় ২২ জনের মতো নিখোঁজ রয়েছে এবং তাদের খোঁজে ২৩০ জনেরও বেশি অনুসন্ধান কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনিস্কি এক্সে লিখেন, ‘আবারও নির্দোষ, নিরীহ মানুষগুলোর উপর হামলা চালালো রাশিয়া, যারা শুধু তাদের নিজ বাসায় ঘুমিয়ে ছিলো।’

সূত্র : আল-জাজিরা।