প্রথম মেয়াদে ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে সাইবার হামলায় সন্তুষ্ট নন ট্রাম্প
এবার সেনাশক্তি ব্যবহারের মধ্য দিয়ে তা অর্জনের চেষ্টা
প্রকাশিত: ০৩:১৪, ১৭ নভেম্বর ২০২৫; আপডেট: ০৩:২৯, ১৭ নভেম্বর ২০২৫
ট্রাম্প তাকে ক্ষমতাচ্যুতের নানা চেষ্টা করলেও এখনও দৃঢ়ভাবে টিকে রয়েছেন ‘শক্তিশালী’ মাদুরো।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদের শেষ বছর ভেনেজুয়েলা সরকারের বিরুদ্ধে গোপন সাইবার হামলা চালায় মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্ট এজেন্সি বা সিআইএ। এ হামলার মধ্য দিয়ে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর কম্পিউটার নেটওয়ার্ক অচল হয়ে পড়ে। যুক্তরাষ্ট্রের এ অভিযান সম্পূর্ণভাবে সফল হয়েছিলো বলে সে সময় এর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত চারটি বিশ্বস্ত সূত্র থেকে নিশ্চিত হয় সিএনএন।
একইসঙ্গে, কারাকাসের বিরুদ্ধে সরাসরি এবং আরও ঝুঁকিপূর্ণ কোনো পদক্ষেপ না নিয়েও ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে কিছু করার এ ধরনের পদক্ষেপ শুধু প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সন্তুষ্টির জন্য নেওয়া হয়েছিলো বলেও নিশ্চিত করে ওই সূত্রগুলো। এভাবে, প্রথমবার ক্ষমতায় থাকাকালীন আরও নানাভাবেই মাদুরোকে ক্ষমতাচ্যুত করার প্রচেষ্টা চালায় ট্রাম্প প্রশাসন। কিন্তু, একে একে এর সবই ব্যর্থ করে দিয়ে এখনও দৃঢ়ভাবে ক্ষমতা আকড়ে রয়েছেন ‘শক্তিশালী’ মাদুরো।
এর ফলে এবার, অর্থ্যাৎ ক্ষমতার দ্বিতীয় মেয়াদে মাদুরোর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যেই আরও শক্ত পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ পেয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। এর অংশ হিসেবে এই গ্রীষ্ম থেকেই ভেনেজুয়েলা সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোতে ক্রমান্বয়ে সেনা উপস্থিতি বাড়িয়ে চলেছে যুক্তরাষ্ট্র। বর্তমানে প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ১০ হাজার সেনাসহ একটি বিমানবাহী রণতরী মোতায়েন করেছে দেশটি।
এমনকি যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি ভেনেজুয়েলায় আক্রমণ করতে চায় এবং একইসঙ্গে গোপনে হামলা চালাতে সেনাবাহিনীর একটি দলকে প্রস্তুত করা হয়েছে বলে চলতি সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানান। এ অবস্থায় গত সপ্তাহে ভেনেজুয়েলার উপক‚লে মার্কিন সেনা হামলা দেশটির প্রেসিডেন্টের এ বক্তব্যকেই সমর্থন করছে।
তবে, যদিও এসব অভিযানকে মূলত মাদক-সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অভিযান বলা হচ্ছে, কিন্তু, অভিযানের যে ব্যাপক প্রস্তুতি এবং আক্রমণের পরিসর থেকে অনেকে এটা সন্দেহ করছেন যে, এটা আসলে ভেনেজুয়েলায় সরকার পতনের আন্দোলন হতে যাচ্ছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প তার শাসনামলের প্রথম মেয়াদ থেকেই মাদুরোর বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালাতে বারবারই পেন্টাগনের কাছে দাবি করে আসছিলো। তবে, এ নিয়ে পেন্টাগন তথা মার্কিন সামরিক বাহিনীর মধ্যে বরাবরই দ্বিধাদ্বন্দ¦ কাজ করে। এ নিয়ে ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে দেশটির সামরিক বাহিনীর এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার সঙ্গে ট্রাম্পের বাগবিতন্ডা হয় বলেও এক সামরিক কর্মকর্তা জানান।
ভেনেজুয়েলার মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে ২০১৮ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন জিমি স্টোরি। দেশটিতে মার্কিন সামরিক হামলা বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে বলা হয় যে হামলা চালানোর মতো সব অপশনই হাতে রয়েছে। এর মধ্যে অনেক অপশন একদম যেকোনো সময় হামলা চালানোর মতো।’
কিন্তু, সে সময় সব সুযোগ থাকা সত্ত্বেও পেন্টাগনের সাহায্য না পাওয়ায় তখন ভেনেজুয়েলায় হামলা চালাতে পারেনি ট্রাম্প। এবার আবার ক্ষমতায় গিয়ে তিনি যে এ সুযোগ আর হাতছাড়া করবেন না, সে সম্পর্কে ট্রাম্প প্রশাসনের তৎকালীন অনেক কর্মকর্তাই নিশ্চিত ছিলেন।
হোয়াইট হাউসের এক সূত্রমতে, মাদুরোকে ক্ষমতা থেকে উৎখাতে সেনা সাহায্য চাওয়ার প্রথম অনুরোধটি ট্রাম্প করেছিলেন ২০১৭ সালে, দেশটির দ্বিতীয় প্রধান জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এইচ. আর ম্যাকমাস্টারের কাছে। তবে, সে সময় তার এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করা হয়।
এরপরও জাতীয় নিরাপত্তা পরামর্শকের কাছে আরও বেশ কয়েকবার অনুরোধ পাঠান ট্রাম্প। কিন্তু, তার এ প্রস্তাব বার বার প্রত্যাখিত হওয়ার পর এক পর্যায়ে তিনি ধৈর্য হারিয়ে ফেলেন। এ অবস্থায় ২০১৯ সালে ট্রাম্প তার তৎকালীন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টনকে বলেন, ‘এখন এটা বাস্তবায়িত করো। এ নিয়ে টানা পঞ্চমবারের মতো আমি এটা বললাম।’ - বোল্টন তার লেখা এক বইয়ে এই তথ্য প্রকাশ করেন।
তবে, মাদুরোর বিরুদ্ধে সেনা অভিযান পরিচালনা নিয়ে যে পেন্টাগন ও সিআইএয়ের মধ্যে অনীহা রয়েছে, সেই বিষয়টি হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তারা খুব দ্রুতই বুঝে নেয়। তাছাড়া, এ নিয়ে পেন্টাগন ও সিআইয়ের মধ্যেও অমত ছিলো বলে সাবেক এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা ও তিনজন সাবেক প্রশাসনিক কর্মকর্তা সূত্রে জানা যায়।
আর, সেনা অভিযান নিয়ে এ উভয় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দ্বন্দের মূল কারণ ছিলো স্নায়ুযুদ্ধের সময় দক্ষিণ আমেরিকায় সিআই এর ভূমিকা। কেননা, সে সময় প্রতিষ্ঠানটি লাতিন আমেরিকায় বেশ কয়েকবার দীর্ঘ সময় ধরে সরকার বদলের চেষ্টা করে এবং প্রতিবারই তারা ব্যর্থ হয়। এটিই ছিলো পেন্টাগনের অনীহার মূল কারণ। এক্ষেত্রে, স্বয়ং তৎকালীন সিআইএ পরিচালক জিনা হ্যাস্পলই ভেনেজুয়েলায় সেনা অভিযানের বিরোধীতা করেন বলে উল্লেখযোগ্য সূত্রে থেকে জানা যায়। একইসঙ্গে, হোয়াইট হাউস থেকে আসা এ সংক্রান্ত সব প্রস্তাবও তিনিই বাতিল করে দেন।
এ অবস্থায় অন্য পথে হাঁটে ট্রাম্প প্রশাসন। নিকোলাস মাদুরোকে ক্ষমতা থেকে উৎখাতে তখন ভেনেজুয়েলার তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা হুয়ান গুয়াইদোকে কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতার প্রস্তাব দেয় ট্রাম্প সরকার। এর ফলশ্রুতিতে ২০১৮ সালে ভেনেজুয়েলায় অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনে গুয়াইদোকে দেশটির প্রকৃত নেতা হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়। যদিও সেই নির্বাচনে মাদুরো জয় লাভ করে, কিন্তু, সে সময় একে অগ্রহণযোগ্য নির্বাচন বলে আন্তর্জাতিকভাবে এর সমালোচনা করা হয়।
একইসঙ্গে, তখন গুয়াইদোকে দেশটির সর্বোচ্চ নেতা হিসেবে স্বীকৃতি দেয় ৫০টিরও বেশি দেশ। এ বিষয়ে ট্রাম্পের সাবেক এক প্রাশাসনিক কর্মকর্তা বলেন, ‘দেশটির পরিস্থিতি ছিলো নাজুক এবং আমরা ভেবেছিলাম বিরোধী দলীয় ওই নেতা ক্ষমতায় গেলে পরিস্থিতির বদল হবে।’

কিন্তু, তাদের এ ধারণা খুব দ্রুতই ভুল প্রমাণিত হয়। কারণ, ব্যক্তি হিসেবে গুয়াইদোর তেমন কোনো নেতৃত্বগুণ ছিলো না। ফলে, তার পক্ষে তখন পুরোপুরিভাবে ভেনেজুয়েলার ক্ষমতা আয়ত্ত্বে আনাও সম্ভব হয়নি। তাছাড়া, মাদুরোর বিরুদ্ধে জনগণও রাস্তায় নেমে আসেনি এবং দেশটির সেনাবাহিনীও ছিলো তার প্রতি অনুগত। ফলে, ২০১৯ সালের বসন্তে সংঘটিত ক্যু ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয় এবং গুয়াইদো এমন এক প্রেসিডেন্টে পরিণত হয় যার হাতে দেশ চালানোর মতো কোনো সরকার ছিলো না।
সার্বিক পরিস্থিতি দেখে ট্রাম্প ব্যাপক ক্ষেপে যান বলে হোয়াইট হাউসের সাবেক এক কর্মকর্তা জানান। কারণ, শুধু গুয়াইদোই নয়, বরং তার পুরো প্রশাসন ব্যর্থ হয়েছে বলেই সে সময় তিনি মনে করেন। ফলে, এ নিয়ে উৎসাহে ভাটা পড়ে ট্রাম্পের। তাই, তার ক্ষমতার দ্বিতীয় মেয়াদের অর্ধেক সময় পর্যন্ত তাকে আর দেশটি নিয়ে নতুন কোনো পরিকল্পনা করতে দেখা যায়নি।
তবে, বিষয়টি যে তিনি একেবারে মাথা থেকে ঝেড়েও ফেলেননি, তা বোঝা যাচ্ছে ভেনেজুয়েলা নিয়ে ট্রাম্পের সাম্প্রতিক পরিকল্পনা থেকে। কারণ, এবার দেশটি সম্পর্কে তার দৃষ্টিভঙ্গি বরং আরও আগ্রাসী। এর সূত্র ধরে হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তাদের মধ্যেও গোপন অভিযান পরিচালনা ও সাইবার হামলার ইচ্ছা জোরালো হয়। তাদের মূল উদ্দেশ্যে ছিলো ভেনেজুয়েলায় সমস্যা সৃষ্টি করা এবং দেশটির সরকারের গোপন সব তথ্য বের করে নিয়ে আসা। এ বিষয়টির সঙ্গে সম্পর্কিত একাধিক উৎস থেকে এ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদের প্রথমার্ধে ‘সাইবার কমান্ড’ নামে পরিচিত মার্কিন সেনাবাহিনীর আগ্রাসী ও প্রতিরোধী সাইবার ইউনিট ভেনেজুয়েলায় সাইবার হামলা করে। তাদের উদ্দেশ্য ছিলো ভেনেজুয়েলাভিত্তিক রাশিয়ার একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ওয়াগনার গ্রুপের স্যাটেলাইট যোগাযোগ ব্যবস্থায় বিঘ্ন সৃষ্টি করা।
এছাড়া, সে সময়ও তাদের পরিকল্পনা ছিলো কোস্ট গার্ডদের নিয়ে একটি বিশেষ দল গঠন করে মাদক চোরাকারবারিদের উপর অভিযান চালানো এবং এ অজুহাতে মূলত গোয়েন্দা তথ্য জোগাড় করা। মূলত, দেশটির ভেতরে মাদক চোরাকারবার ঠেকাতেই এ প্রকল্পের কথা ভাবা হয়েছিলো। যদিও এর আড়ালে যুক্তরাষ্ট্রের মূল উদ্দেশ্যে ছিলো ভেনেজুয়েলায় সামরিক অভিযান চালানো, কিন্তু, আইনি ও প্রশাসনিক ঝামেলায় পড়ার আশঙ্কায় সে সময় আর এটা বাস্তবায়িত হয়নি।
একইসঙ্গে, সে সময় সাইবার হামলার সঙ্গে ভেনেজুয়েলার একটি হাইড্রোলিক বাঁধ উড়িয়ে দেওয়ারও প্রস্তাব করা হয়। কিন্তু, পর্যাপ্ত সমর্থন না পাওয়ায় তখন এ পরিকল্পনা আর তারা বাস্তবায়ন করতে পারেনি। তবে, সে সময় ধারণা করা হয়েছিলো, ভেনেজুয়েলায় যদি পর্যাপ্ত সমস্যা সৃষ্টি করা যায়, তাহলে হয়তো দেশটির সেনাবাহিনী মাদুরোর উপর থেকে তাদের সমর্থন তুলে নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত বিরোধী দলকে সমর্থন দিবে। কিন্তু, এক্ষেত্রে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি না থাকায় এ ধরনের উদ্যোগ নিতে ব্যর্থ হয় যুক্তরাষ্ট্র।
এ বিষয়ে হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা মন্তব্য করেন, ‘বিরোধীদের কোনো পরিকল্পনা নেই। আমাদের কোনো প্রস্তুতি নেই। আশা কোনো পরিকল্পনা হতে পারে না।’
এ অবস্থায় ট্রাম্প তার ক্ষমতার দ্বিতীয় মেয়াদে এসে ভেনেজুয়েলার প্রতি নরম মনোভাব দেখাবেন বলে অনেকেই আশা করেছিলো। কারণ, ট্রাম্প ভেনেজুয়েলায় বিনা দোষে আটকে রাখা মার্কিন নাগরিকদের মুক্তির বিষয়ে আলোচনা করতে বেশ কয়েকবার তার বিশেষ দূত রিচার্ড গ্রেনেলকে মাদুরোর কাছে পাঠান। কিন্তু, চলতি মাসগুলোতে গ্রেনলকে এ ব্যাপারে আর কোনো উদ্যোগ না নেওয়ার পরামর্শ দেন ট্রাম্প।
কারণ, বর্তমানে ভেনেজুয়েলার পুরো বিষয়টি দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মার্কিন স্বরাষ্ট্র সচিব মার্কো রুবিওকে। এর ফলে, দেশটিতে সেনা অভিযান চালানোর বিষয়ে পেন্টাগনের উপর সর্বোচ্চ পর্যায়ের চাপ এসে পড়ে বলে মন্তব্য করেন এক কর্মকর্তা। তবে, এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান স্বরাষ্ট্র সচিব রুবিও।
তবে, তার দায়িত্ব নেওয়ার পরই সেনা প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র। কারণ, এর পর থেকেই একের পর এক সশস্ত্র হামলা চালাতে শুরু করে দেশটি। যদিও এগুলোর সবই এখনও পর্যন্ত ছোট নৌযান লক্ষ্য করে, তবে, এর সবই ভেনেজুয়েলা বন্দর থেকেই যাত্রা করেছিলো। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে দাবি করা হয় যে, নৌযানগুলো মাদক চোরাচালান করছিলো। কিন্তু, তাদের এ বক্তব্যের স্বপক্ষে এখনও জোরালো কোনো প্রমাণ তারা দেখাতে পারেনি। তাছাড়া, ভেনেজুয়েলা কখনোই ব্যাপকহারে মাদক উৎপাদনকারী দেশ ছিলো না এবং দেশটি থেকে যুক্তরাষ্ট্রে মাদক প্রবেশ করার মতো তেমন কোনো চক্রও সেখানে গড়ে উঠেনি।
তবে, এখনও পর্যন্ত ভেনেজুয়েলা সম্পর্কে মার্কিন প্রশাসনের অবস্থান অস্পষ্টই রয়ে গেছে। তবে, ক্যারিবীয় সাগরে মোতায়েন করা রণতরীগুলো শেষ পর্যন্ত ভেনেজুয়েলা সরকারের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত না হলে বরং এটা বিস্ময়ের কারণ হবে বলে মন্তব্য করেছেন ভেনেজুয়েলায় সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত জিমি স্টোরি।
এ বিষয়ে সিএনএনকে তিনি বলেন, ‘হয়তো মার্কিন কোনো সেনাদলের ভেনেজুয়েলায় সরাসরি আক্রমণের কোনো উপায় নেই, তবে তাদের পক্ষে দেশটির নেতৃত্বের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনা সম্ভব।’
কিন্তু, ডোনাল্ড ট্রাম্প, যে কিনা ক্ষমতার আসার পর ইরাক ও আফগানিস্তানে মার্কিন যুদ্ধের সমালোচনা করেছিলেন, তার পক্ষে এ ধরনের আক্রমণাত্মক আচরণের রাজনৈতিক ঝুঁকি সম্পর্কে অবগত থাকাটাই স্বাভাবিক। ফলে, যুদ্ধের বিপক্ষে অবস্থান নেওয়া ‘নতুন মানসিকতার’ এ প্রেসিডেন্টের পক্ষে এরইমধ্যে ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের ‘বিজয়’ ঘোষণা করার মতো একাধিক উপায় প্রস্তুত রাখা অসম্ভব নয় বলেই ধারণা সাবেক হোয়াইট হাউস কর্মকর্তাদের। তাদের মতে, ‘এটা অনেকটা পোষা কুকুরকে বশে করে রাখার মতো বিষয়। অর্থ্যাৎ, তুমি যা-ই চাও, এখানে তাই করা সম্ভব।’
উল্লেখ্য, লেখাটি প্রকাশের আগে সিএনএনের পক্ষ থেকে হোয়াইট হাউস, সিআইএ এবং সাইবার কমান্ড থেকে মন্তব্য চাওয়া হয়েছিলো। কিন্তু, তাদের সবাই মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
সিএনএন থেকে বাংলায় অনুবাদ নুসরাত জাহান।



