অর্থ ও বাণিজ্য

মুনাফা কমার আশঙ্কা ওয়ালমার্টের

অর্থ ও বাণিজ্য ডেস্ক

প্রকাশিত: ২১:৩৩, ২৭ জুলাই ২০২২;  আপডেট: ০২:৪২, ২৯ অক্টোবর ২০২২

মুনাফা কমার আশঙ্কা ওয়ালমার্টের

সাধারণ মানুষের জীবনযাপনের ব্যয় বাড়ার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মুনাফার ওপরও।

মুনাফার পরিমাণ আবারো কমে যেতে পারে বলে জানিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সুপারশপ ব্র্যান্ড ওয়ালমার্ট। চলতি বছর এ পরিমাণ ১৩ শতাংশ পর্যন্ত কমতে পারে বলে সোমবার জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এর আগে গত মে মাসে আরেকবার এ ধরনের পূর্বাভাস দিয়েছিলো দেশটির সবচেয়ে বড় এ চেইন শপ।

বিশ্বজুড়েই খাদ্যদ্রব্য ও জ্বালানির দাম বেড়ে চলেছে। এর ফলে ক্রেতারা তাদের ব্যয়ের পরিমাণও কমাচ্ছে। এ কারণেই মুনাফার পরিমাণ আবারো কমার আশঙ্কা করছে ওয়ালমার্ট।

বর্তমানে ৬০ বিলিয়ন ডলার সমমূল্যের পণ্য মজুদ রয়েছে বলে গত মে মাসে অর্ধ-বাৎসরিক আয়ের পরিমাণ প্রকাশের সময় জানিয়েছিলো ওয়ালমার্ট। এ সময় তারা তাদের বিভিন্ন পণ্যের দামে বড় অঙ্কের ছাড় দিতে যাচ্ছে বলেও জানায়। এ ছাড়াও এবারই প্রথম প্রতিষ্ঠানটি তাদের মুনাফার পরিমাণ কমার বিষয়টি প্রকাশ করলো। আগামী ১৬ আগস্ট বছরের বাকি সময়ের আয়ের হিসাব প্রকাশ করবে প্রতিষ্ঠানটি।

চলতি বছর তাদের বাৎসরিক লাভের পরিমাণ মাত্র এক শতাংশ কমতে পারে বলে এর আগে ওয়ালমার্ট জানিয়েছিলো। তবে সোমবার প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী ডাগ ম্যাকমিলান এক বিবৃতিতে উল্লেখ করেন, খাদ্যপণ্য ও জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে ক্রেতাদের মধ্যে খরচ কমানোর একটা প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এ কারণে ওয়ালমার্টও তাদের কাপড়ের দাম কমাবে।

এদিকে সোমবার নিউ ইয়র্কের পুঁজি বাজারে অফিসের নির্ধারিত সময়ের পরেও প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারের প্রায় ১০ শতাংশ দরপতন হয়। একই সময় ওয়ালমার্টের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যামাজন ও টার্গেটেরও শেয়ারের বড় দরপতন হয়। ১৯৮৭ সালের পর এটিই ছিলো ওয়ালমার্টের শেয়ারের সবচেয়ে বড় দরপতন।

খাদ্যপণ্য ও জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে ক্রেতারা বর্তমানে ব্যয় কমাতে প্রয়োজনীয় জিনিস ছাড়া শৌখিন দ্রব্যাদি কেনা থেকে বিরত থাকবে বলে মন্তব্য করেন খুচরা পণ্যের তথ্য বিশ্লেষণকারী প্রতিষ্ঠান গ্লোবালডেটার ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিল স্যান্ডার্স। একইসঙ্গে, ওয়ালমার্টের মতো এ ধরনের অন্য সুপারশপগুলোরও এ বছর একই অবস্থা হতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

স্যান্ডার্স বলেন, 'ওয়ালমার্টের মতো এমন লাভজনক প্রতিষ্ঠান খুব কমই রয়েছে। ফলে ছোটখাট সমস্যা এড়িয়ে যেতে তাদের তেমন সমস্যা হয় না। কিন্তু এখন যেখানে তারা নিজেরাই স্বীকার করছে যে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি তাদের লাভের পরিমাণে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে, তাহলে এটি খুব সহজেই বোঝা যাচ্ছে- এ ধরনের অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর কী অবস্থা হতে যাচ্ছে।'

উল্লেখ্য, সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে জ্বালানি ও খাদ্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতির কারণে দ্রুতগতিতে বেড়ে চলেছে অন্য সব পণ্য ও সেবার দাম। একদিকে ইউক্রেনে যুদ্ধ এবং অন্যদিকে করোনা মহামারি-পরবর্তী পরিস্থিতির কারণে মানুষের জীবনযাপনের ব্যয় যেমন বেড়েছে তেমনি বেড়েছে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যয়ও। আর এর প্রভাব ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোর মুনাফার ওপরও পড়ছে।

সূত্র : বিবিসি।