রাজনীতি

শরণার্থীদের জন্য আলবেনিয়ায় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করবে ইতালি

রাজনীতি ডেস্ক

প্রকাশিত: ২২:৪৩, ৭ নভেম্বর ২০২৩

শরণার্থীদের জন্য আলবেনিয়ায় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করবে ইতালি

রোমে আয়োজিত বৈঠকে চুক্তিটি স্বাক্ষর করেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলানি (ডানে) এবং আলবেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী ইদি রামা।

বিভিন্ন দেশ থেকে আসা শরণার্থীদের জন্য আলবেনিয়ায় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করতে যাচ্ছে ইতালি। আলবেনিয়ার উত্তর-পশ্চিমাংশে দু’টি আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে এবং ইতালি এগুলোর ব্যয়ভার বহন করবে। গতকাল সোমবার আলবেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী ইদি রামার সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের পর ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি গণমাধ্যমকে এসব তথ্য জানান।

বৈঠক শেষে মেলানি ও রামা বলেন, ‘একে আমরা সত্যিকার অর্থেই একটি ইউরোপীয় চুক্তি বলতে পারি। আমরা এটিও বলতে চাই যে, এই অঞ্চলে আসা শরণার্থীদের ব্যবস্থাপনায় একসঙ্গে কাজ করা সম্ভব।’

২০২৪ সালে নির্মাণের পর আশ্রয় কেন্দ্র দু’টিতে প্রায় ৩ হাজারের মতো শরণার্থীকে আশ্রয় দেওয়া সম্ভব হবে বলেও জানানো হয়। তবে পর্যায়ক্রমে এসব আশ্রয়কেন্দ্রের ধারণক্ষমতা আরও বাড়ানো হবে এবং এর মধ্য দিয়ে বছরে প্রায় ৩৬ হাজার শরণার্থীকে এসব কেন্দ্রে আশ্রয় দেওয়া সম্ভব হবে বলে ইতালির প্রধানমন্ত্রী জানান।

নির্মিতব্য এ আশ্রয়কেন্দ্র দু’টি ইতালির তত্ত্বাবধানে থাকবে এবং আলবেনিয়া এর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে বলেও জানানো হয়।

তবে গর্ভবতী নারী ও অপ্রাপ্তবয়স্কদের আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানো হবে না বলে এ সময় উল্লেখ করা হয়। একইসঙ্গে ইতালির পক্ষ থেকে যদি কোনো শরণার্থীর আবেদন বাতিল করা হয়, তাহলে আলবেনিয়া তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাবে বলেও গণমাধ্যমকে প্রধানমন্ত্রী মেলানি জানান।

শরণার্থীদের অবৈধভাবে ইতালিতে প্রবেশ বন্ধ করা হবে বলে তার নির্বাচনী প্রচারণায় দৃঢ়ভাবে জানিয়েছিলেন মেলানি। এর মধ্য দিয়েই গত বছর নির্বাচনে জয়ী হন তিনি।

তার কট্টর ডানপন্থী দল ব্রাদারস অব ইতালি আরও আগে থেকেই ইউরোপের বাইরে অর্থাৎ উত্তর আফ্রিকার মতো দেশে এ ধরনের কেন্দ্র নির্মাণের পরামর্শ দিয়ে আসছিলো। কিন্তু কোনো দেশই এতোদিন তাদের এ প্রস্তাবে সম্মত হয়নি।

তবে আলবেনিয়ায় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের এ সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলে এর সমালোচনা করেছে ইতালির বিরোধী দল গ্রীণ পার্টির নেতা অ্যাঞ্জেলো বোনেল্লি।

তার উদ্ধৃতি দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, ‘এ সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে সরকার তার দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। এগুলো হতে যাচ্ছে এক ধরনের বন্দিশিবির যেখানে শরণার্থীদের মানসম্মত পরিবেশ নিশ্চিত না করার ব্যাপক ঝুঁকি থেকে যাবে।’

উল্লেখ্য, অবৈধভাবে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে প্রতিবছর বহু শরণার্থী বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ইতালি যায়। চলতি বছর এ পর্যন্ত প্রায় ১ লাখ ৪৫ হাজার শরণার্থী মানব পাচারকারীদের নৌকায় করে ইতালিতে প্রবেশ করেছে। গত বছরের এ সময় পর্যন্ত এ সংখ্যা ছিলো ৮৮ হাজার।

সূত্র: ডয়চে ভেলে।