রাজনীতি

হামাসকে সহযোগিতার অভিযোগ

ফিলিস্তিনে সহায়তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের

রাজনীতি ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৩:৩৯, ২৮ জানুয়ারি ২০২৪;  আপডেট: ২৩:৪৭, ২৮ জানুয়ারি ২০২৪

ফিলিস্তিনে সহায়তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের

ইউএনআরডব্লিউএর ১২ কর্মীর বিরুদ্ধে হামাসকে সহযোগিতার অভিযোগ করেছে ইসরায়েল।

ফিলিস্তিনে ত্রাণ সহায়তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। বিশ্বের ৯টি দেশের প্রতি আজ বুধবার তিনি এ আহ্বান জানান।

জাতিসংঘের অঙ্গসংগঠন দ্য ইউনাইটেড ন্যাশনস রিলিফ অ্যান্ড ওয়ার্কস এজেন্সির (ইউএনআরডব্লিউএ) মাধ্যমে ফিলিস্তিনে এ ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হয়। তবে এ সংগঠনের কিছু কর্মীর বিরুদ্ধে সম্প্রতি হামাসকে সহযোগিতার অভিযোগ ওঠে। এর পরই বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশ সংগঠনটিতে ত্রাণ সহায়তা বন্ধের ঘোষণা দেয়।

এ বিষয়ে মহাসচিব বলেন, ‘এ অঞ্চলের জনগণের জন্য প্রয়োজনীয় সাহায্যের জোগান অব্যাহত রাখা বর্তমানে অত্যন্ত প্রয়োজন।’

গত বছরের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের গাজাভিত্তিক দল হামাস ইসরায়েলে অতর্কিতে হামলা চালায়। এটি ছিলো দেশটির বিরুদ্ধে হামাসের সবচেয়ে বড় কোনো হামলার ঘটনা।

সে সময় ইউএনআরডব্লিউএর কিছু কর্মী হামাসকে সাহায্য করে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত শুক্রবার ইসরায়েলের বরাত দিয়ে দেশটির এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমে এ বিষয়ে অভিযোগ করে।

তাদের এ অভিযোগ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে এ হামলায় ইউএনআরডব্লিউএর যানবাহন ব্যবহার করাসহ এ সংস্থাটির অন্যান্য সুবিধা নেওয়া হয়েছে বলে ইসরায়েলি গণমাধ্যমে উল্লেখ করা হয়।

ইসরায়েলের এ অভিযোগের পর ৯টি দেশ ফিলিস্তিনে ত্রাণ সহায়তা বন্ধ ঘোষণা করে। দেশগুলো হলো - যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি ও নেদারল্যান্ডস।

এদিকে এ অভিযোগের পর পরই ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে বলে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে জানানো হয়। একইসঙ্গে সন্দেহভাজন কয়েকজন কর্মীকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলেও জানায় সংস্থাটি।  

গত শনিবার প্রকাশিত এক বিবৃতিতে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘ইসরায়েল ইউএনআরডব্লিউএর ১২ কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে। এদের মধ্য থেকে এরইমধ্যে ৯ জনকে বরখাস্ত করা হয়েছে, ১ জন মারা গেছে এবং বাকি ২ জনের পরিচয় সম্পর্কে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।’

এ অভিযোগের ভিত্তিতে যেসব দেশ ফিলিস্তিনে জাতিসংঘের তহবিলে ত্রাণ দেওয়া বন্ধ করেছে তাদের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, ‘দেশগুলোর উদ্বেগের বিষয়টি আমরা অনুধাবন করতে পারছি। আমি নিজেও এ ধরনের অভিযোগে উদ্বিগ্ন। ফলে যে বা যারাই এর সঙ্গে জড়িত, তাদের অবশ্যই এর পরিণতি ভোগ করতে হবে। কিন্তু তাদের ভুলের জন্য সংস্থাটির আরও হাজার হাজার নির্দোষ কর্মী তো শাস্তি পেতে পারে না।’  

উল্লেখ্য, ১৯৪৯ সালে জাতিসংঘের অঙ্গসংগঠন হিসেবে ইউএনআরডব্লিউএ প্রতিষ্ঠা করা হয়। বর্তমানে গাজায় নিয়োজিত জাতিসংঘের সবচেয়ে বড় সংস্থা এটি। সংস্থাটি ফিলিস্তিনের গাজা ও পশ্চিম তীরসহ জর্ডান, লেবানন এবং সিরিয়ায় তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে।

এ ক্ষেত্রে সংস্থাটি মূলত এসব অঞ্চলের স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ও অন্যান্য মানবিক বিষয় নিয়ে কাজ করে থাকে। বর্তমানে শুধু গাজাতেই এ সংগঠনের ১৩ হাজার কর্মী নিয়োজিত আছে।

গত বছরের অক্টাবরে হামাসের হামলার পাল্টা জবাব হিসেবে ইসরায়েল গাজা আক্রমণ করে। তখন থেকে পরবর্তী তিন মাসে ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধে এ উপত্যকার হাজার হাজার মানুষ বাস্তচ্যুত হয়। এ অবস্থায় ইউএনআরডব্লিউএ গাজায় থাকা তাদের বিভিন্ন শিবিরে বাস্তচ্যুত এসব মানুষকে আশ্রয় দিয়ে আসছে।   

সূত্র : সিএনএন, বিবিসি, আল-জাজিরা।