কম্বোডিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতির শর্ত ভঙ্গের অভিযোগ থাইল্যান্ডের
রাজনীতি ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৩:৩৯, ২৯ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ২৩:৫০, ২৯ জুলাই ২০২৫

সংঘাত চলাকালে উভয় পক্ষের ছোঁড়া রকেট ও বোমার আঘাতে দুই দেশেরই অনেক জনগণ নিহত হয়।
কম্বোডিয়া অব্যাহতভাবে যুদ্ধবিরতির শর্ত ভঙ্গ করে চলেছে বলে অভিযোগ করেছে থাইল্যান্ড। সোমবার দেশ দুটি এ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার একদিন পরই এ অভিযোগ করা হলো। দেশ দুটির যৌথ সীমান্তে সংঘটিত এ যুদ্ধে কমপক্ষে ৩৩ জন নিহত হওয়াসহ হাজারের মতো বাস্তচ্যুত হয়েছে।
থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার যৌথ সীমান্তে গত পাঁচদিন ধরে চলা এ যুদ্ধে ব্যাপকভাবে বোমা ও রকেট হামলা চালানো হয়। পরবর্তীতে, গতকাল সোমবার দেশ দুটির মধ্যে যুদ্ধবিরতির চুক্তি হলেও প্রথম থেকেই এটি খুব বেশি নির্ভরযোগ্য ছিলো না।
কারণ, চুক্তির পর মধ্যরাত থেকে গুলি চালানো বন্ধ করা হয় বলে থাই সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়। কিন্তু, তা সত্ত্বেও কম্বোডিয়ার পক্ষ থেকে গুলি করা বন্ধ হয়নি এবং আজ সকাল পর্যন্ত সীমান্তবর্তী বিভিন্ন এলাকায় গুলির ঘটনা ঘটে অভিযোগ করে থাইল্যান্ড।
তবে, মধ্যরাতে যুদ্ধবিরতি শুরুর পর কোনো ধরনের সংঘাতের ঘটনা ঘটেনি বলে কম্বোডিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানায়।
এদিকে, এসব অভিযোগ সত্ত্বেও যুদ্ধবিরতির শর্তের অংশ হিসেবে আজ সকালে বৈঠকে বসে উভয় পক্ষের স্থানীয় নেতারা। এ সময় তারা গোলাগুলি বন্ধ ও সীমান্তে সেনা মোতায়েন বন্ধের বিষয়ে রাজি হয়। একইসঙ্গে, সীমান্ত এলাকা থেকে তাদের নিহত সেনাদের মরদেহ নিয়ে যেতে পারবে বলেও সম্মত হয় উভয় দেশ।
তবে, পরবর্তীতে আর কোনো ধরনের সংঘাত এড়াতে সীমান্তে স্বাধীনভাবে নজরদারি অব্যাহত রাখবে বলে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া জানায়।
উল্লেখ্য, বিরোধপূর্ণ সীমান্ত নিয়ে বহু যুগ ধরে দেশ দুটির মধ্যে উত্তেজনা চলমান রয়েছে। তবে, গত মে মাসে এক সংঘাতে কম্বোডিয়ার এক সেনা নিহত হলে দেশ দুটির মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হয়। এ অবস্থায় গত সপ্তাহে এক ভূমি মাইন বিস্ফোরণে পাঁচ থাই সেনা আহত হলে দেশ দুটি পুরোদমে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে।
এ সময় সীমান্তের কিছু অংশ বন্ধ করে দেয় থাইল্যান্ড। একইসঙ্গে, কম্বোডিয়া থেকে তাদের রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহার করাসহ কম্বোডিয়ার রাষ্ট্রদূতকে থাইল্যান্ড থেকে বহিষ্কার করে ব্যাংকক। দুই দেশের মধ্যে বন্ধ হয়ে যায় সব ধরনের আমদানি-রফতানি বাণিজ্য।
সংঘাত চলাকালে উভয় পক্ষের ছোঁড়া রকেট ও বোমার আঘাতে দুই দেশেরই অনেক জনগণ নিহত হয়। বাস্তচ্যুত হয় অনেক বাসিন্দা। এ অবস্থায় কম্বোডিয়ার তরফ থেকে যুদ্ধবিরতির জন্য চাপ দেওয়া হলে গতকাল মালয়েশিয়ার মধ্যস্থতায় উভয় দেশ এতে সম্মত হয়।
এ ক্ষেত্রে, থাইল্যান্ড প্রথমে যুদ্ধবিরতিতে রাজি না থাকলেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের তরফ থেকে শুল্ক সংক্রান্ত আলোচনা স্থগিতের হুমকি দেওয়া হয়। পরবর্তীতে, যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় থাইল্যান্ড।
সূত্র : বিবিসি।