রাজনীতি

পরমাণু অস্ত্র থাকার বিরল ইঙ্গিত দিলেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী

রাজনীতি ডেস্ক

প্রকাশিত: ২০:৫১, ৩ আগস্ট ২০২২;  আপডেট: ০২:৪৪, ২৯ অক্টোবর ২০২২

পরমাণু অস্ত্র থাকার বিরল ইঙ্গিত দিলেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়ার সময় ইয়ার লাপিড ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামূলক ও আক্রমণাত্মক অস্ত্র সক্ষমতার বিষয়ে আলোচনা করেন।

ইসরায়েলের হাতে পরমাণু অস্ত্র থাকার প্রচ্ছন্ন ইঙ্গিত দিলেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী ইয়ার লাপিড। দেশটির অ্যাটমিক এনার্জি কমিশন-এর নেতৃত্বে রদবদল উপলক্ষে সোমবার আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়ার সময় তিনি এ ইঙ্গিত দেন। লাপিড বলেন, "ইসরায়েলের হাতে সাধারণ অস্ত্রের সক্ষমতার পাশাপাশি 'অন্য সক্ষমতা'ও রয়েছে।" আন্তর্জাতিক পরিসরে 'অন্য সক্ষমতা' বলতে সাধারণত পরমাণু অস্ত্রের মজুদ থাকাকেই বোঝানো হয়।

পরমাণু অস্ত্র আছে কি না- এ প্রশ্নে দেশটি বরাবরই খুব অস্পষ্ট উত্তর দিয়ে থাকে। সোমবারই প্রথম লাপিড এ ব্যাপারে এমন বিরল ইঙ্গিত দিলেন।

সোমবার অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়ার সময় ইয়ার লাপিড ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামূলক ও আক্রমণাত্মক অস্ত্র সক্ষমতার বিষয়ে আলোচনা করেন। এ সময় তিনি দেশটির 'অন্য সক্ষমতা' (আদার ক্যাপাবিলিটিস) থাকার কথা উল্লেখ করেন। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো এই অন্য সক্ষমতা বলতে মূলত পরমাণু সক্ষমতাকেই ইঙ্গিত করে।

প্রধানমন্ত্রী লাপিড বলেন, "আমরা নিজেদেরকে আত্মরক্ষা ও আক্রমণাত্মক সক্ষমতা দিয়ে সুরক্ষিত করেছি। এর বাইরে আমাদের সেই সক্ষমতাও রয়েছে যাকে বিদেশি গণমাধ্যমগুলো সাধারণত 'অন্য সক্ষমতা' হিসেবে উল্লেখ করে থাকে। আর এ অন্য সক্ষমতাই আমাদের বাঁচিয়ে রেখেছে এবং যতোদিন আমরা ও আমাদের সন্তানেরা আছি, এটিই সবাইকে বাঁচিয়ে রাখবে।"

ধারণা করা হয়, ইসরায়েলের হাতে অন্তত কয়েকশ পরমাণু অস্ত্র রয়েছে। ১৯৬০-এর দশক থেকে তারা পরমাণু কর্মসূচি চালিয়ে আসছে। পরমাণু ক্ষমতাধর দেশগুলো সাধারণত তাদের এই সক্ষমতার কথা অস্বীকার করে না। তবে এ ক্ষেত্রে ইসরায়েলই বিরল উদাহরণ। আনুষ্ঠানিকভাবে এখন পর্যন্ত তারা পরমাণু সক্ষমতার বিষয়টি স্বীকার করেনি। তবে নানা সময়ে প্রশ্ন উঠলেও দেশটির নেতারা অস্পষ্ট বক্তব্যের মাধ্যমে বরাবরই একধরনের ধোঁয়াশা তৈরি করে রেখেছেন।

ইসরায়েলি নেতাদের মধ্যে এ ধরনের প্রথম ইঙ্গিতটি ১৯৬০-এর দশকে করেছিলেন তৎকালীন কনিষ্ঠ প্রতিরক্ষা মন্ত্রী শিমোন পেরেজ। তিনি ওই সময় বলেন, 'এ অঞ্চলে ইসরায়েলই প্রথম পরমাণু অস্ত্র সক্ষমতা সম্পন্ন দেশ নয়, তা আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি।'  

এ ছাড়া বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুও একবার তার মন্ত্রিসভায় আলোচনাকালে 'পরমাণু শক্তি' কথাটি উচ্চারণ করেন। পরক্ষণেই অবশ্য তিনি তা সংশোধন করে একে শক্তি বা এনার্জি হিসেবে উল্লেখ করেন।

সম্প্রতি জার্মানির একটি টেলিভিশন অনুষ্ঠানে পরমাণু সক্ষমতাসম্পন্ন দেশের নাম উল্লেখ করতে গিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী এহুদ ওলমার্ট যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও ফ্রান্সের সঙ্গে ইসরায়েলের নামও উল্লেখ করেন। পরে অবশ্য তিনি তার এ মন্তব্য থেকে সরে আসেন অর্থাৎ ওই তালিকা থেকে ইসরায়েলের নাম প্রত্যাহার করে নেন।

সূত্র : সিএনএন।