স্বদেশ

আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা

বাসস

প্রকাশিত: ২২:১৫, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৩;  আপডেট: ১৭:২৪, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৩

আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা

২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয়ে এই নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করা হয় বলে শেখ হাসিনা জানান।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে  তার দলের পক্ষ থেকে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। আজ বুধবার রাজধানী ঢাকার একটি হোটেলে এ ইশতেহার ঘোষণা করেন তিনি।

ডিজিটাল থেকে স্মার্ট বাংলাদেশে উত্তরণের মাধ্যমে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত স্মার্ট সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয়ে এই নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করা হয় বলে শেখ হাসিনা জানান।

এ বিষয়ে তিনি বলেন, 'দ্বাদশ নির্বাচনকে সামনে রেখে আমরা আবারও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। অতীতের ধারাবাহিকতায় এবারও আমরা সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে একটি বাস্তবায়নযোগ্য নির্বাচনী ইশতেহার তৈরি করেছি। ২০০৮, ২০১৪ এবং ২০১৮-এর নির্বাচনী ইশতেহারে ঘোষিত দীর্ঘমেয়াদি কর্মপরিকল্পনাগুলির ধারাবাহিকতা দ্বাদশ নির্বাচনী ইশতেহারেও রক্ষিত হয়েছে।'

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দ্বাদশ নির্বাচনী ইশতেহার পুস্তিকা আকারে প্রকাশ করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, 'এখানে এই স্বল্প সময়ে তা সবিস্তারে তুলে ধরা সম্ভব নয়। আমি সংক্ষিপ্তাকারে কয়েকটি বিষয় আমার লিখিত বক্তব্যে আপনাদের সামনে তুলে ধরেছি।'

এখানে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার তুলে ধরা  ইশতেহারের মূল বিষয়গুলো উল্লেখ করা হলো :

৩.১ ডিজিটাল থেকে স্মার্ট বাংলাদেশে উত্তরণ

৩.২ সুশাসন
ক) গণতন্ত্র, নির্বাচন ও কার্যকর সংসদ
খ) আইনের শাসন ও মানবাধিকার সুরক্ষা
গ) গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও অবাধ তথ্যপ্রবাহ
ঘ) জনকল্যাণমুখী, জবাবদিহিমূলক, দক্ষ ও স্মার্ট প্রশাসন
ঙ) জনবান্ধব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গড়ে তোলা
চ) দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ
ছ) সন্ত্রাস ও সাম্প্রদায়িকতা
জ) স্থানীয় সরকার
ঝ) ডিজিটাল ভূমি ব্যবস্থাপনা

৩.৩ অর্থনীতি
ক) সামষ্টিক অর্থনীতি: উচ্চ আয়, টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন

  • মুদ্রা সরবরাহ ও ব্যাংকিং ব্যবস্থা
  • বিনিয়োগ ও উন্নয়ন
  • আর্থিকখাতে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা ও অপরাধ দমন

খ) দারিদ্র্য বিমোচন ও বৈষম্য হ্রাস
গ) ‘আমার গ্রাম-আমার শহর’: প্রতিটি গ্রামে আধুনিক নগর সুবিধা সম্প্রসারণ
ঘ) তরুণ যুবসমাজ: ‘তারুণ্যের শক্তি-বাংলাদেশের সমৃদ্ধি’

ঙ) কৃষি, খাদ্য ও পুষ্টি

  •      মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ

চ) শিল্প উন্নয়ন
ছ) বিদ্যুৎ ও জ্বালানি
জ) যোগাযোগ
ঝ) অবকাঠামো উন্নয়নে মেগা প্রজেক্ট
ঞ) সুনীল অর্থনীতি
ট) এমডিজি অর্জন এবং এসডিজি বাস্তবায়ন কৌশল (২০১৬-৩০)
ঠ) ব-দ্বীপ পরিকল্পনা-২১০০

        ব-দ্বীপ পরিকল্পনা-২১০০ এর কাঙ্খিত ৬টি লক্ষ্য উল্লেখ করা হয়েছে: ১.বন্যা ও জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত বিপর্যয় থেকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা; ২.পানি ব্যবহারে অধিকতর দক্ষতা ও নিরাপদ পানি নিশ্চিত করা; ৩.সমন্বিত ও টেকসই নদী অঞ্চল এবং মোহনা ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা; ৪.জলবায়ু ও বাস্তুতন্ত্র সংরক্ষণ এবং সেগুলোর যথোপযুক্ত ব্যবহার নিশ্চিত করা; ৫.অন্তঃ ও আন্তঃদেশীয় পানিসম্পদের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য কার্যকর প্রতিষ্ঠান ও সুশাসন গড়ে তোলা এবং ৬. ভূমি ও পানিসম্পদের সর্বোত্তম সমন্বিত ব্যবহার নিশ্চিত করা।

৩.৪ সামাজিক নিরাপত্তা ও সেবা
ক) সর্বজনীন পেনশন: সময়োপযোগী উদ্যোগ
খ) শিক্ষা
গ) স্বাস্থ্যসেবা ও পরিবার কল্যাণ
ঘ) সংস্কৃতি
ঙ) ক্রীড়া
চ) শ্রমিক কল্যাণ ও শ্রম নীতি

  •      বৈদেশিক কর্মসংস্থান

ছ) নারীর ক্ষমতায়ন
জ) শিশু কল্যাণ
ঝ) মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণ
ঞ) বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ও প্রতিবন্ধী কল্যাণ
ট) ক্ষুদ্র জাতিসত্তা, নৃ-গোষ্ঠী ও ধর্মীয় সংখ্যালঘু
ঠ) অনগ্রসর জনগোষ্ঠী

  • দলিত ও অবহেলিত জনগোষ্ঠী
  • কুষ্ঠরোগী, বেদে ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠী
  • হিজড়া জনগোষ্ঠী

ড) জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ সুরক্ষা
ঢ) এনজিও ও সরকার

৩.৫ স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব
ক) পররাষ্ট্র
খ) প্রতিরক্ষা: নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা

ইশতেহার ঘোষণা শেষে শেখ হাসিনা বলেন, ‌'আন্তরিকতা ও নিষ্ঠা থাকা সত্ত্বেও সরকার পরিচালনা করতে গিয়ে সবসময়ই যে আমরা শতভাগ সফল হয়েছি, এমন দাবি করবো না। তবে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কথামালার রাজনীতিতে বিশ্বাসী নয়। আমরা যা বলি তা বাস্তবায়ন করি। ২০০৮, ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনি ইশতেহার বাস্তবায়ন তার প্রমাণ। তবে মাঝে-মধ্যে মনুষ্য-সৃষ্ট, প্রাকৃতিক এবং বৈশ্বিক বাধাবিপত্তি আমাদের চলার গতিপথকে মন্থর করেছে।'

তবে এসব প্রতিকূলতা মোকাবেলা করে আওয়ামী লীগ দেশকে আরও সমৃদ্ধ  করতে সক্ষম জানিয়েছে তিনি আরও বলেন, 'এই মুহূর্তে বাংলাদেশ এক ক্রান্তিকালে দাঁড়িয়ে। স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে সামিল হতে যাচ্ছে দেশ। এই উত্তরণ যেমন একদিকে সম্মানের, অন্যদিকে বিশাল চ্যালেঞ্জেরও। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত সরকারকে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার সক্ষমতা থাকতে হবে। একমাত্র আওয়ামী লীগই পারবে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে দেশকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে।'