রাজনীতি

সংবাদ সম্মেলনে থাইল্যান্ড সফরের বিস্তারিত জানালেন প্রধানমন্ত্রী

রাজনীতি ডেস্ক

প্রকাশিত: ২১:১৮, ২ মে ২০২৪;  আপডেট: ২১:১৯, ২ মে ২০২৪

সংবাদ সম্মেলনে থাইল্যান্ড সফরের বিস্তারিত জানালেন প্রধানমন্ত্রী

শেখ হাসিনা বলেন, থাইল্যান্ডের সঙ্গে অংশীদারিত্বের নতুন যুগের সূচনা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় তার সরকারি বাসভবন গণভবনে সাম্প্রতিক থাইল্যান্ড সফরের বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন। এ সময় তিনি দেশটির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার পাশাপাশি অন্যান্য বিষয় সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন।

প্রধানমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে একটি লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান। এতে তিনি বলেন, থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিন-এর আমন্ত্রণে দ্বিপাক্ষিক সফরে এবং ইউএন-এসক্যাপ-এর ৮০তম অধিবেশনে যোগদানের জন্য আমি গত ২৪ থেকে ২৯ এপ্রিল ২০২৪ থাইল্যান্ড সফর করি। কয়েকজন মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপদেষ্টা এবং ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তাবৃন্দ আমার সফরসঙ্গী ছিলেন। ৪ এপ্রিল ২০২৪ ব্যাংককে পৌঁছালে বিমানবন্দরে আমাকে লালগালিচা সংবর্ধনা, গার্ড অব অনার ও গান স্যালুটের মাধ্যমে অভ্যর্থনা জানানো হয়।'

প্রধানমন্ত্রী এ সময় জানান, ২২ থেকে ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ব্যাংককে ইউএন-এসক্যাপ-এর ৮০তম বার্ষিক অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেওয়ার জন্য সংস্থাটির এক্সিকিউটিভ সেক্রেটারি তাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। দেশে ব্যস্ত থাকায় শেখ হাসিনা এতে অংশ নিতে পারেননি। তবে, উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অধিবেশনের মূল প্রতিপাদ্য 'এশীয়-প্রশান্ত মহাসারীয় অঞ্চলে টেকসই উন্নয়নে ডিজিটাল উদ্ভাবনা জোরদার' বিষয়ে তার পূর্বধারণকৃত একটি ভিডিও বার্তা সেখানে প্রদর্শন করা হয়।

তিনি আরো জানান, ২৫ এপ্রিল সকালে ইউএন-এসক্যাপ-এর একটি অধিবেশনে তিনি এশীয় প্রশান্ত অঞ্চলে সহযোগিতা জোরদার করার মধ্য দিয়ে জাতিসংঘের এজেন্ডা ২০৩০ ও টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জন বিষয়ে বক্তব্য দেন। এতে তিনি বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন অভিজ্ঞতা তুলে ধরার পাশাপাশি ইউএন-এসক্যাপ-এর মাধ্যমে বাংলাদেশের উদ্ভাবিত ও বাস্তবায়িত বিভিন্ন উন্নয়ন মডেল এ অঞ্চলের অন্যান্য দেশের সঙ্গে বিনিময় করার বিষয়ে আগ্রহের কথা জানান।

দ্বিপাক্ষিক বৈঠক শেষে দুই দেশের সহযোগিতার ক্ষেত্রকে আরো বৃদ্ধির লক্ষ্যে একটি চুক্তি, তিনটি সমঝোতা স্মারক ও একটি 'আগ্রহ পত্র' (লেটার অব ইনটেনশন) স্বাক্ষর হয়েছে। এগুলো হলো :

(ক) অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা অব্যাহতি সংক্রান্ত চুক্তি;
(খ) জ্বালানি সহযোগিতা বিষয়ক সমঝোতা স্মারক;
(গ) পর্যটন সহযোগিতা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক;
(ঘ) শুল্ক সংক্রান্ত পারস্পরিক সহযোগিতা বিষয়ক সমঝোতা স্মারক; এবং
(ঙ) মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির আলোচনা শুরু করার জন্য একটি আগ্রহ পত্র।

শেখ হাসিনা বলেন, চুক্তি ও সমঝোতাসমূহ স্বাক্ষর শেষে আমি ও থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনেরন সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখি। সংবাদ সম্মেলন শেষে আমার সৌজন্যে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক আয়োজিত রাষ্ট্রীয় মধ্যাহ্নভোজে যোগদান করি। আমার ছোট বোন শেখ রেহানাও এতে অংশ নেয়।

থাইল্যান্ডে আমার সরকারি সফরটি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে। এটি আমাদের দুই দেশের মধ্যে ফলপ্রসু অংশীদারিত্বের একটি নতুন যুগের সূচনা করেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, থাইল্যান্ডের সঙ্গে অংশীদারিত্বের নতুন যুগের সূচনা হয়েছে। থাইল্যান্ডে আমার সরকারি সফরটি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে।

তিনি বলেন, সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্বার্থ সুরক্ষা এবং আঞ্চলিক সম্পৃক্ততা বৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশের বিশেষ প্রয়াস হিসেবে সফরটি সফল ও ফলপ্রসূ হয়েছে বলে আমি মনে করি।

শেখ হাসিনা আরো বলেন, 'আমি সকল ধরনের আগ্রাসন ও নৃশংসতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার জন্য এবং যুদ্ধকে 'না' বলার জন্য আবারও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানাই। আমি ফিলিস্তিনে অব্যাহত গণহত্যা, মিয়ানমারে চলমান সংঘাত, ও রোহিঙ্গা সমস্যা নিরসনে এশিয়া-প্রশান্ত অঞ্চলসহ বিশ্ব সম্প্রদায়কে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানাই।'

সূত্র : বাসস ও আরটিভি অনলাইন।