জলবায়ু

খরা সমস্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা জানিয়েছে জাতিসংঘ

জলবায়ু ডেস্ক

প্রকাশিত: ২২:১৫, ১৩ মে ২০২২;  আপডেট: ০১:৪১, ২৯ অক্টোবর ২০২২

খরা সমস্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা জানিয়েছে জাতিসংঘ

২০৫০ সালের মধ্যে সুপেয় পানির সঙ্কট দ্বিগুণ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

সামনের দিনগুলোতে খরা সমস্যা আরও তীব্র হতে যাচ্ছে বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ। সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে সংস্থাটি বলেছে, খরার ঘটনা আগের চেয়ে বাড়বে এবং খরার স্থায়িত্বও আরও দীর্ঘায়িত হবে। পাশাপাশি বাড়বে সুপেয় পানির সঙ্কট। অতিরিক্ত গরমের প্রভাবে বনাঞ্চলগুলোতে আগুন লাগার ঘটনাও অনেক বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আর এসব ঘটবে জলবায়ুর ওপর মানবসৃষ্ট ঘটনার নেতিবাচক প্রভাবের কারণে।

সম্প্রতি আইভরি কোস্টের আবিদজানে জলবায়ু বিষয়ক এক সম্মেলনের সূত্রে বুধবার প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বিশ্বের মোট জনসংখ্যার তিন ভাগের এক ভাগ (প্রায় ২৩০ কোটি) এরই মধ্যে পানির সঙ্কটে আছে। ২০৫০ সালের মধ্যে এই সংখ্যা দ্বিগুণ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

ওই প্রতিবেদন বলছে, বিশ্বের কোনও অঞ্চলই খরার ঝুঁকি থেকে মুক্ত নয়, তবে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাচ্ছে আফ্রিকা মহাদেশ। গত এক শতাব্দিতে মহাদেশটিতে রেকর্ডসংখ্যক ১৩৪টি খরার ঘটনা ঘটেছে। আফ্রিকার মতো আমেরিকা, ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার অবস্থাও অনেক খারাপের দিকে যাওয়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। বিগত বছরগুলোতে এসব অঞ্চলে নানা ধরনের দুর্যোগ বেড়ে যাওয়াই এর প্রমাণ।

প্রতিবেদনে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, খরার কারণে ভারতের মোট দেশজ উৎপাদন ১৯৯৮ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে ৫ শতাংশ কমেছে। একই কারণে অস্ট্রেলিয়ার কৃষিজ উৎপাদন ২০০২ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে ১৮ শতাংশ হ্রাস পায়। কম বৃষ্টিপাতের কারণে দেশটিতে বনাঞ্চলে আগুন লাগার ঘটনাও ২০১৯-২০ সালের চেয়ে বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে প্রতিবেদনটিতে সতর্ক করা হয়েছে।

জাতিসংঘ বলছে, বিশ্বের সবচেয়ে বড় বন অ্যামাজনের ক্ষেত্রেও এসব ঝুঁকি রয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যেই সেখানে ঘটা তিনটি খরার ঘটনায় কয়েকবার বনে আগুন লাগার ঘটনা দেখা গেছে। বন উজাড়ের ঘটনা বর্তমান হারে চলতে থাকলে এই অঞ্চলের অবশিষ্ট বনের ১৬ শতাংশ ২০৫০ সালের মধ্যে পুড়ে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, গাছ কেটে বন উজাড় করাসহ মানুষের অন্য যেসব আচরণ জলবায়ুর ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে, সেগুলোর ব্যাপারে এখনই সতর্ক হতে হবে। না হলে বৃষ্টিপাত কমা ও তাপমাত্রা বাড়ার কারণে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বাড়তেই থাকবে। সুপেয় পানির যে সঙ্কট তৈরি হবে, তা মোকাবিলা করা অসম্ভব হয়ে উঠবে। বিশ্বের নানা অঞ্চলে এরই মধ্যে এসব সঙ্কট তীব্রতর হতে শুরু করেছে অদূর ভবিষ্যতে যা অন্যান্য অঞ্চলেও ঘটবে।

সূত্র : এপি।